ডাকসুর ভিপির দায়িত্ব নিচ্ছেন নুরুল হক নূর

52

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর ভিপির দায়িত্ব নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নুরুল হক নূর। পাশাপাশি নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
আজ ডাকসু ও হল সংসদগুলোর নবনির্বাচিতদের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগের দিন গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান নূর। এদিন বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলনে নূর বলেন, শিক্ষার্থীদের ‘সম্মতিক্রমে’ ভিপির দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। দায়িত্ব গ্রহণের যে সিদ্ধান্ত সেটা আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করেই নিয়েছি। তারা মনে করে, আমরাও মনে করি যে পুনঃনির্বাচনের জন্য দায়িত্ব নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া উচিত এবং আমি সেটা করব।
দায়িত্ব নিয়ে পুনর্র্নিবাচনের দাবি স্ববিরোধী কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে নূর বলেন, ‘ডাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা দেওয়া মানেই হলো এই নির্বাচনটা এক্সিস্টিং আছে। সেই জায়গা থেকে আরেকটা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তো এই কমিটি থাকবে। সেক্ষেত্রে আরেকটা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তো শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে হবে। যেহেতু ২৮ বছর পর নির্বাচন হয়েছে, আমরা চাই না যে এই প্রক্রিয়াটা থেমে থাকুক। আমরা চাই, এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক’। খবর বিডিনিউজের
প্রায় তিন দশক পর গত ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে জয়ী হন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরুল হক নূর। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে নূরের প্যানেল সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদসহ অধিকাংশ প্যানেল ওই দিন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়। নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নতুন করে ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রঐক্য ও স্বতন্ত্র জোটসহ ওই সব প্যানেলের প্রার্থীরা। নূরও তাদের আন্দোলনে শরিক হয়েছেন।
পুনর্র্নিবাচনের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে ডাকসুর ভিপি হিসেবে দায়িত্ব নেবেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবে এর আগে নূর বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাইলে তিনি দায়িত্ব নেবেন, আর না চাইলে নেবেন না।
সেই শিক্ষার্থীদের মতামতের ভিত্তিতেই এখন নূরের এই সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন কোটাবিরোধী আন্দোলনের আরেক নেতা ও ডাকসুর পরাজিত জিএস প্রার্থী রাশেদ খান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা হলে হলে গিয়েছি। লাইব্রেরিতে গিয়েছি। সর্বত্র সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা মতামত দিয়েছে যে, নূর ভাই যদি দায়িত্ব নেয় তাহলে সে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করতে পারবে। ডাকসু নির্বাচনের একটি ফলাফল যেহেতু হয়ে গেছে এই ফলাফল পুনরায় নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এক্সিস্টিং থাকবে। সে কারণে শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে যে, নূর ভাই দায়িত্ব নিয়ে গণরুম, গেস্ট রুম ও হলে হলে যে শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন- এসবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন। এবং পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত প্রতিটি সংগঠনের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করবে’।
ভিপির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ‘কোনো ধরনের চাপ নেই’ বলে জানান নূর। দায়িত্ব নেওয়ার পরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হবে। দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া মানে অন্যকে অসৎ ও অশুভ শক্তিকে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া। সেই জায়গা থেকে আমরা বলব যে, দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে দায়িত্বশীল কথা বলতে হবে। সিনেট-সিন্ডিকেটে এই নির্বাচনের বিভিন্ন ধরনের কারচুপির বিষয়টি ভালোভাবে তুলে ধরব। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি যে, নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে। তিনি যেন তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। এখন তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে’।