ঝর্ণায় নিভে গেল মুন্নার পরিবারের স্বপ্ন

20

ফার্নিচার ব্যবসায়ী পিতার সংসারে ৬ ভাইবোনের মধ্যে সাইফুর রহমান মুন্না ছিল সবার বড়। মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা মুন্না হাটহাজারী সরকারি কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষে অধ্যায়নরত ছিল। পড়াশুনার পাশাপাশি উক্ত কলেজে সে ছাত্র রাজনীতিতেও ছিল বেশ সক্রিয়।
শত প্রতিক‚লতার মাঝেও তার পিতা সিরাজুল হক ছেলেকে সম্মান শ্রেণিতে পড়াছিলেন। হতভাগ্য পিতার স্বপ্ন ছিল শিক্ষাজীবন শেষ করে ছেলে সংসারের হাল ধরবে। পিতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে মুন্নাও বেশ ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিল। মুহূর্তের মধ্যেই যেন তাদের পরিবারের স্বপ্ন এলোমেলো হয়ে গেল।
গতকাল সোমবার সকালে পাহাড়ি জমিতে নিজের হাতে লাগানো গাছ দেখতে গিয়েছিলেন মুন্না। ফেরার পথে পাহাড়ি ঝর্ণার স্রোতে পড়ে মৃত্যু হয় তার। পুত্রের অকাল মৃত্যুতে তার মা আঙ্কুরা বেগম পুত্র শোকে এসব কথা বলে বিলাপ করছিলেন। অন্যদিকে পিতা সিরাজুল হক তার পরিবারের বড় ছেলেকে অকালে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
ছাত্রলীগ নেতা মুন্নার আকস্মিক মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না কলেজ শিক্ষক, সহপাঠি, রাজনৈতিক সহকর্মী ও এলাকাবাসী।
হাটহাজারী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাকেরিয়া চৌধুরী সাগর জানান, বড় অসময় চলে গেল মুন্না। তার এ অকাল মৃত্যুতে হাটহাজারী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগ পরিবারের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এ সময় তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। কারণ কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের কাছে মুন্নার আলাদা কদর ছিল, যা কখনও ভুলবার নয়।
এদিকে ঘটনার দিন দুপুরে মুন্নার মরদেহ উদ্ধার করে তার গ্রামের বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দুলাই পাড়া এলাকার সুলতান মেম্বারের নতুন বাড়িতে নেওয়া হলে কলেজ শিক্ষক, সহপাঠি, রাজনৈতিক সহকর্মী ও এলাকার সর্বস্তরের জনতা ভিড় করে।
অন্যদিকে হাটহাজারী সরকারি কলেজ এর রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রাশেদা আক্তার জানান, আমাদের বিভাগের সম্মান চতুর্থ বর্ষের মেধাবী ছাত্র ক্যাম্পাসে ফিরবে না তা ভাবতেই পারছি না। হাসিখুশি, বিনয়ী, ভদ্র, পরোপকারী কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আপনজন মুন্নার অকাল মৃত্যুর খবরে আমরা শোকাহত।