‘জুলধা-ওয়ান’ পাওয়ার প্লান্টে উৎপাদন বন্ধ

105

কর্ণফুলী নদীর তীরে ‘জুলধা-ওয়ান’ পাওয়ার প্লান্ট থেকে জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালনকারী প্রোটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্রান্সফরমারটি এখনো সারেনি। ফলে সঞ্চালন দিতে না পেরে ‘জুলধা-ওয়ান’ পাওয়ার প্লান্টে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পিজিসিবিএল (পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লি.) বলছে ট্রান্সফরমারটি পুনস্থাপন করতে মঙ্গলবার পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
পিডিবি ও পিজিসিবি সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাত ১০টার দিকে ১০০ মেগাওয়াট ‘জুলধা-ওয়ান’ পাওয়ার প্লান্ট সংলগ্ন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাব-স্টেশনটির (উপকেন্দ্র) একটি প্রোটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার বিস্ফোরিত হয়। এই ট্রান্সফরমারটির মাধ্যমে জুলধা-ওয়ান এ উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিড সাবস্টেশনটির মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন দেওয়া হতো। ট্রান্সফরমারটির বিস্ফোরণের ফলে সাব স্টেশনটির সাথে সংযুক্ত হাটহাজারি ২৩০ কেভি গ্রিড সাব স্টেশন শাটডাউনের কবলে পড়ে। হাটহাজারি গ্রিড সাবস্টেশনের মাধ্যমে পুরো চট্টগ্রামে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়। এতে রবিবার রাত ১০টা থেকে ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগের ৫ জেলা বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। রাত ১২টার দিকে নগরীর কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হলেও গ্রাম্য এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট থেকেই যায়।
এদিকে রাতে যান্ত্রিক ত্রুটির পরে সোমবার সকালে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়ে চট্টগ্রাম। দুপুরের দিকে পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়। এদিকে রবিবার বিস্ফোরিত ট্রান্সফরমারটির স্থলে আরেকটি নতুন প্রোটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার সংযোজন করতে হবে বলে জানিয়েছেন পিজিসিবিএল’র কর্মকর্তারা।
জুলধা ১৩২/৩৩ কেভি সাব স্টেশনে পিজিসিবিএল’-এর প্রকৌশলী আলাউদ্দীন চৌধুরী পূর্বদেশকে জানান, রবিবার রাত ১০টার দিকে হঠাৎ করে প্রোটেনশিয়াল ট্রান্সফরমারটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের পর সাব স্টেশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ফায়ার এক্সটিংগুইশার ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, কি কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ২০০৯ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণের সময় ট্রান্সফরমারটি সংযোজন করা হয়েছিল। দেশীয় প্রতিষ্ঠান এনার্জি প্যাক ট্রান্সফরমার সরবরাহ করেছিল। ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ হলেও এ ধরনের ট্রান্সফরমার দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু এখানে দেশীয় নিম্নমানের পণ্যের কারণেও ট্রান্সফরমারটির বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এটি নতুন করে পুনঃস্থাপন করতে হবে। ট্রান্সফরমারটি সচল না হওয়া পর্যন্ত জুলধা-ওয়ান পাওয়ার প্লান্টের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে জুলধা-থ্রি পাওয়ার প্লান্টটির উৎপাদন সচল রয়েছে।
স্থানীয় জুলধা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম হৃদয় জানান, রবিবার রাত ১০টার পর হঠাৎ করে ১৩২/৩৩ কেবি গ্রিড সাবস্টেশনের ট্রান্সফরমারে বিস্ফোরণ ঘটে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ অনেক উপরের দিকে উঠে যায়। এসময় পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে গেলে গ্রামে আতংক তৈরি হয়।
পিজিসিবিএল চট্টগ্রামের ডিজিএম তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার দাশ পূর্বদেশকে বলেন, ‘আমরা বিস্ফোরিত ট্রান্সফরমারটি রিপ্লেস (পুনঃস্থাপন) করার কাজ করছি। এটি সারিয়ে তুলতে আগামীকাল (মঙ্গলবার) পর্যন্ত লাগতে পারে।’