গণজোয়ার দেখে নৌকার সমর্থকরা হামলা করেছে

145

বাঁশখালীতে লাঙ্গল প্রতীকের গণজোয়ার দেখে নৌকা প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। নির্বাচনী পথসভায় হামলার শিকার হয়ে মামলা করতে গেলে থানা থেকে বের করে দেয়ারও অভিযোগ করেন লাঙ্গল প্রতীকের এ প্রার্থী। পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নৌকার প্রার্থী জামানত হারাবে বলেও তিনি দাবি করেন। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে বাঁশখালীতে নিজের পথসভায় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনে অংশ নেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) বাঁশখালীর চাম্বলে পথসভা করতে যাবার সময় উত্তর চাম্বলের সিকদার দোকান এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হকের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ অতর্কিতে হামলা চালায়। এসময় ২০ থেকে ২৫ জন লাঙ্গলের নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। তারপরেও হাজার হাজার মানুষ সভায় পৌঁছায়। পথসভায় বক্তব্য রাখার সময় আবারও গুলিবর্ষণ করে। এসময়ও অনেক মানুষ গুলিবিদ্ধ হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
লিখিত বক্তব্যে জাতীয় পার্টির এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ওইদিন সন্ধ্যার পর চাম্বল, জলদি, পাইরাং, জালিয়াঘাটা, চেচুরিয়া ও কালিপুরের আওয়ামী লীগের সশস্ত্র গ্রুপ হামলার উদ্দেশে তার বাড়ি অভিমুখে রওয়ানা দেয়। একপর্যায়ে বাড়ি ঘেরাও করে গুলি করে সরকারদলীয় সমর্থকরা। রাতে বৈলছড়ি, চেঁচুরিয়া, বাণীগ্রাম, কালিপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আমার দলের ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেনি। এমনকি ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নিবার্চনে সারাদেশে মহাজোট ২৭১ আসন পেলেও, বাঁশখালীতে নৌকা জয়লাভ করেনি। ইতিহাসগতভাবে বাঁশখালী নৌকা ও আওয়ামী লীগবিরোধী।
তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একদিকে নৌকা ও লাঙ্গল নিয়ে মহাজোট, অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রতিদ্বন্দীতা করছে। বাঁশখালী আসনে ঐক্যফ্রন্টের বিএনপি-জামায়াত আলাদাভাবে নির্বাচন করছে। গত উপজেলা নির্বাচন প্রমাণ করেছে বাঁশখালীতে জামায়াত প্রথম, বিএনপি দ্বিতীয় ও আওয়ামী লীগ তৃতীয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বাঁশখালীতে নৌকার জনসমর্থন নেই। গত ২০ বছর নির্বাচনের বাইরে ছিলাম। কিন্তু এলাকার সাথে নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। যে কারণে লাঙ্গল প্রতীকের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে।‘
বাঁশখালী আসনে নৌকা প্রতীকের প্রতিদ্বন্দীতায় আসার সম্ভাবনা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দীতা হবে লাঙ্গলের সাথে জামায়াত বা ঐক্যফ্রন্টের। তাই এখন সময় এসেছে আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট নেত্রী শেখ হাসিনার সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার।‘ তিনি শেষমুহূর্তে নিজের পক্ষে মহাজোটের সমর্থন চেয়েছেন।
পথসভায় হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জয়বাংলা বলে আমার মিছিলে গুলি চালিয়েছে। মুজিব চেয়ারম্যান পুলিশ-বিজিবির সামনে গুলি করেছে। অথচ মামলা করতে গেলে বাঁশখালী থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে থানা থেকে বের করে দিয়েছে। প্রশাসন ন্যূনতম নিরপেক্ষ না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন অসম্ভব।‘
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কালীপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নেজাম উদ্দিন চৌধুরী, বাঁশখালী উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি জসিম উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, মোরশেদুল আলম, উসমান খান, মো. নাছির প্রমুখ।