কুতুবদিয়ায় জোয়ারে প্লাবিত ১৫ গ্রাম

69

বৈরী আবহাওয়া ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে কুতুবদিয়া উপকূলে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪/৫ ফুট উচ্চতায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দ্বীপটির উপকূলের ১৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার রায় প্লাবনের খবর পেয়ে দ্বীপের মুরালিয়া, জেলে পাড়া, তাবলরচর, কাইয়ার পাড়া, বায়ু বিদ্যুৎ এলাকা, আকবর বলী ঘাট, চর ধুুরং সহ ১৫টি গ্রাম ঘুরে দেখেন। এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় প্লাবিত এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবারের লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন তিনি।
ইউএনও জানান, বৈরী আবহাওয়ায় উপকূলে ৩নং সতর্ক সংকেতের পাশাপাশি পূর্ণিমায় স্বাভাবিকের ছেয়ে জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বেড়িবাঁধ ভাঙ্গন এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে মাইকিং করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কুতুবদিয়া দ্বীপের ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ২০ কিলোমিটার বিলীন রয়েছে। এ ভাঙ্গা বাঁধ দিয়ে চলতি পূর্ণিমার জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে ১৫টি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকশত পরিবার। জোয়ারের নোনা জলে হাজার হাজার একর ফসলি জমি ও শত শত একর বীজতলা তলিয়ে গেছে। বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় তিন মাস অতিবাহিত হলেও বৃষ্টির কোন ধরনের লক্ষণ দেখা না গেলেও আষাঢ়ের শেষ সপ্তাহে বৃষ্টি শুরু হয়। সাধারণ কৃষকদের ফসলি জমি নোনা জলে ডুবে যাওয়ায় চাষাবাদের আশা ছেড়ে দিয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা নুরুচ্ছাফা জানান, আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের পশ্চিম তাবলরচর, আনিচের ডেইল, জেলে পাড়া, কাহার পাড়া এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
কুতুবদিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর জানান, দক্ষিণ মুরালিয়া, অমজাখালী, আজম কলোনী, কৈয়ারবিল মলমচর, উত্তর কৈয়ারবিল, মহাজন পাড়া, মফজল ডিলার পাড়া, বাতিঘর পাড়া, কাইছার পাড়া, নয়াকাটা, আকবরবলী ঘাট, ফয়জানির বাপের পাড়া, পূর্ব নয়াকাটা, উত্তর সতর উদ্দিন, পেয়ারাকাটা, ক্রসডেম বিসিক এলাকায় জোয়ারের নোনা পানি ডুকে ব্যাপক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
জোয়ারে তলিয়ে যাওয়া ঘরবাড়ি হারা উত্তর ধুুরুং আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া ফাতেমা বেগম জানান, বৈরী আবহাওয়া ও পূর্ণিমার জোয়ারের পানিতে তাদের চোখের সামনে ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। নিরুপায় হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে এসেছেন।
কক্সবাজার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, পূর্ব থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭১ পোল্ডারের কুতুবদিয়া দ্বীপে ১৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভাঙ্গা ছিল। বিগত তিন বছর পূর্বে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রায় ৯২ কোটি টাকায় বাঁধ নির্মাণ করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ দিলেও যথাসময়ে কাজ করেনি। তবে বেশি ভাঙন এলাকায় জোয়ারের পানি থেকে রক্ষার জন্য জিও ব্যাগে বালি ভর্তি করে কিছু কিছু এলাকায় বাঁধ দেয়া হয়েছে। গত দুই দিন ধরে পশ্চিম তাবলরচর এলাকায় ভাঙা বাঁধে জোয়ার ঠেকানোর জন্য মাটি দিলেও পূর্ণিমার জোয়ারে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তা তলিয়ে গেছে।