কক্সবাজার না বাঁচলে বিপর্যয় ঘটবে

36

কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষতির আশঙ্কা অবশ্যম্ভাবী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অ্যাড. সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার যদি না বাঁচে তাহলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমাদের আর্থ-সামাজিক বিপর্যয় ঘটবে’। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প- গুচ্ছ স্থাপনের পরিকল্পনা: ঝুঁকিতে বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ রয়েছে, সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে। সংবিধানের মাধ্যমে এ দেশের সব সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব তারা নেবে। দেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের নৈতিক ও সাংবিধানিক দায়িত্ব রয়েছে সম্পদ রক্ষার’।
কক্সবাজার রক্ষার আহ্বান জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, ‘এক সময় আমরা কক্সবাজারকে বিশ্বের শীর্ষ প্রাকৃতিক স্থান হিসেবে স্বীকৃতির জন্য ক্যাম্পেইন করেছি। এখন আমরাই কক্সবাজারকে ধ্বংস করছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো বাংলাদেশের মানুষ দেশের সম্পদ রক্ষা করতে না পারার জন্য ঐতিহাসিকভাবে দায়বদ্ধ থাকতে হবে। আমি একজন সচেতন নাগরিক বাংলাদেশকে বিশ্বে পরিবেশ দূষণকারী দেশের শীর্ষে দেখতে চাই না’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)- এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘এ ধরনের শিল্প স্থাপনায় সর্বপ্রথম পরিবেশগত সমীক্ষা করা প্রয়োজন। মাতারবাড়ি প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছে জাইকা। পরিবেশগত সমীক্ষাও করেছে জাইকা। সে ক্ষেত্রে তারা নেতিবাচক দিকটি জানলেও তা প্রকাশ করবে না। কোনো প্রকল্পেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পরিবেশগত কোনো সমীক্ষা করা হয়নি। এর প্রভাব মানুষের ও প্রকৃতির ওপরে কি হবে, তারও সমীক্ষা করা হয়নি। বিদ্যুৎ আমাদের প্রয়োজন আছে, তবে তা দেশের ও পরিবেশের ক্ষতি করে নয়’।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পাঠ করেন বাপার সাধারণ সম্পাদক এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারের মাত্র ২৫ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৭ হাজার মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক ১৫টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। সারাদেশে যত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, তার অর্ধেকই কক্সবাজার অঞ্চলে’।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাপা’র নির্বাহী সহ-সভাপতি ডা. মো. আব্দুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক শারমিন মুরশিদ, বাপার কক্সবাজার শাখার সভাপতি ফজলুল কাদের চৌধুরী, বাপা মহেশখালী শাখার সদস্য সচিব আবু বক্কর সিদ্দিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।