এনায়েতুল্লাহ খান (১৯৩৯-২০০৫)

26

এনায়েতুল্লাহ খান, সাংবাদিক, কূটনীতিবিদ। তিনি ১৯৩৯ সালের ২৫ মে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার বাহেরচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা বিচারপতি আবদুল জববার খান পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার ছিলেন।
এনায়েতুল্লাহ খান ঢাকা কলেজ ও ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে অধ্যয়ন করেন। তিনি ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৮ সালে দর্শনশাস্ত্রে এম.এ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে তিনি ঢাকা হল (বর্তমান শহীদুল্লাহ হল) ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।
এনায়েতুল্লাহ খানের কর্মজীবন শুরু হয় ‘পাকিস্তান অবজারভার’ পত্রিকার একজন রিপোর্টার হিসেবে। ১৯৬৫ সালে তিনি ‘সাপ্তাহিক হলিডে’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি পত্রিকাটির সম্পাদক নিযুক্ত হন। তাঁর দক্ষ সম্পাদনায় পত্রিকাটি অভিজাত ও শিক্ষিত মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়।
১৯৭৬-৭৭ সালে তিনি বাংলাদেশ টাইমসের সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭৫ সালে সামরিক সরকারের ভূমি সংস্কার ও ভূমি প্রশাসন উপদেষ্টা এবং ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান সরকারের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। কূটনীতিবিদ হিসেবেও দীর্ঘ দিন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি চীন, উত্তর কোরিয়া, কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব শেষে পুনরায় সাপ্তাহিক হলিডে পত্রিকার সম্পাদনা শুরু করেন। ২০০৩ সালে তিনি নিউ এজ নামে একটি ইংরেজি দৈনিক প্রতিষ্ঠা করেন।
এনায়েতুল্লাহ খান ১৯৭৩-৭৬ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং ১৯৮৪-৮৫ সালে ঢাকা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনি ফারাক্কা আন্দোলন, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন, সা¤প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন প্রভৃতি সুশীল সমাজের নানা কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দেন।
এনায়েতুল্লাহ খান ঞযব ঞবংঃধসবহঃ ড়ভ ঞরসব নামক একটি বই রচনা করেন। বইটি ৩ খন্ডে প্রকাশিত। কর্মপ্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ এনায়েতুল্লাহ খান ২০০৪ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
২০০৫ সালের ১০ নভেম্বর কানাডার টরেন্টোতে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। সূত্র : বাংলাপিডিয়া