উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী (১৮৭৩ – ১৯৪৬)

133

খ্যাতনামা চিকিৎসক এবং বৈজ্ঞানিক ছিলেন। তিনি কালাজ্বরের ওষুধ ইউরিয়া স্টিবামাইন আবিষ্কার করেছিলেন। উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী বিহারের মুঙ্গের জেলার জামালপুরে ১৮৭৩ সালে ১৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর পিতা ডাক্তার নীলমনি ব্রহ্মচারী এবং তাঁর মাতা সৌরভসুন্দরী দেবী ।
উপেন্দ্রনাথ জামালপুরে পূর্ব রেলওয়ের বয়েজ হাইস্কুলে পড়েছিলেন। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে গণিতে প্রথম শ্রেণির অনার্স সহ বিএ পাস করেন হুগলি কলেজ থেকে। ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজে রসায়নে এমএ পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এলএমএফ, ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে ভেষজবিজ্ঞান ও শল্যচিকিৎসায় প্রথম স্থান নিয়ে এমবি পাস করেন এবং গুডিভ ও ম্যাকলাউড পদক পান। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে এমডি এবং এর পর শরীরতত্তে¡ পিএইচডি ডিগ্রি পান। পিএইচডিতে তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল রক্তের লোহিতকণিকার ভাঙন। এ ছাড়াও তিনি কোটস পদক, গ্রিফিথ পুরস্কার ও মিন্টো পদক পান।
১৯২০ সালে উপেন্দ্রনাথ তৈরি করেন ইউরিয়া স্টিবামাইন। ১৯২২ সালে ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ মেডিক্যাল রিসার্চে ৮ জন কালাজ্বর রোগীকে সুস্থ করার বিবরণ সহ উপেন্দ্রনাথের আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হয়। তিনি তাঁর গবেষণাপত্রে ওষুধটির বিষাক্ততা সম্পর্কে আলোচনা করেন। ১৯২৩ সালের জুলাই মাসে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল গেজেটে ইউরিয়া স্টিবামাইন সম্পর্কে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশিত হয়। ১৯২৪ সালের এপ্রিল মাসে উপেন্দ্রনাথ আরও কিছু তথ্য প্রকাশ করেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল গেজেটে। কালাজ্বর ছাড়াও উপেন্দ্রনাথ ফাইলেরিয়া, ডায়াবেটিস, কুষ্ঠ, মেনিনজাইটিস প্রভৃতি নিয়েও গবেষণা করেছিলেন। চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্বন্ধে রচনাবলীর মধ্যে ‘ট্রিটিজ অন কালাজ্বর’ বিখ্যাত।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে গ্রিফিথ মেমোরিয়াল পুরস্কারে সম্মানিত করেছিল। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন তাঁকে মিন্টো পদক দিয়েছিল। এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গল তাঁকে স্যার উইলিয়াম জোনস পদকে সম্মানিত করেছিল। এ ছাড়াও তিনি কাইজার-ই-হিন্দ স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁকে রায়বাহাদুর উপাধিতে ভূষিত করেছিল। ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে উপেন্দ্রনাথ ব্রহ্মচারী নাইট উপাধি পান। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে মেডিসিনে নোবেল পুরস্কারের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল। ১৯৪৬ সালে ৬ ফেব্রæয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। সূত্র : ইন্টারনেট