উপাধ্যক্ষকে কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ আদালতের

196

সীতাকুন্ডে বিজয় স্মরণী কলেজে বিধি বহির্ভুতভাবে নিয়োগের অভিযোগে এনে সদ্য নিয়োগকৃত উপাধ্যক্ষকে সবধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়া একজনের মামলার প্রেক্ষিতে গত ১৫ অক্টোবর এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাসভবনে কলেজ গভর্নিং বডির সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৯ এর ৪ ধারার খ উপধারায় আছে,স্নাতক পর্যায়ে পাঠদানকারী কোন কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে আবেদন করতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ন্যূনতম দ্বিতীয় বিভাগ/শ্রেণিসহ কমপক্ষে ১২ বছর ডিগ্রি কলেজ পর্যায়ে পাঠদানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়াও আবেদনকারীকে ডিগ্রি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কমপক্ষে ৩ বছর শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী রেগুলেশন (সংশোধিত) ২০১৫-তেও ডিগ্রি কলেজে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা বলা হয়েছে। অর্থাৎ উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানকারী কলেজের কোনো শিক্ষক ডিগ্রি পর্যায়ে পাঠদানকারী কোনো কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগে আবেদন করতে পারবেন না – পূর্বদেশকে জানিয়েছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ কলেজ পরিদর্শক রাজ বিন কাসেম। তবে অবাক করার বিষয় বিধি অনুযায়ী আবেদন করার সুযোগ না থাকলেও উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রাউজান আশালতা কলেজের (উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কলেজ) গণিত বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ভূপতি কুমার দাশ।
জানা গেছে, যারা আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে দুই আবেদনকারীকে প্রথমেই বাদ দেওয়া হয়েছে। যাচাই-বাছাই কমিটি না থাকায় অধ্যক্ষ নিজেই দুইজনকে বাদ দেন। যাতে পছন্দের প্রার্থীকে সহজে নিয়োগ দেওয়া যায়। এমন অভিযোগ রয়েছে ওই কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। গত ১৭ আগস্ট নিয়োগ পরীক্ষা হওয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর ভূপতি কুমার দাশকে উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই বিষয়টি নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া এক শিক্ষক সংশ্লিষ্ট ১৫ জনকে আসামি করে সীতাকুন্ড সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা করেন। গত ১৫ অক্টোবর ওই মামলায় আদালত আদেশ করেন, উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ভূপতি কুমার দাশ কলেজে যোগদান, অনুমোদন ও এমপিওভুক্ত না করাসহ ও কোনো রকম কার্যক্রম করতে পারবেন না। কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য হওয়ায় সংশ্লিষ্ট অনেকে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন জানিয়েছেন, ‘বিধিতে আবেদন করার যোগ্যতা না থাকলেও অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীরের পছন্দের প্রার্থী হওয়ায় সাংসদকে ভুল বুঝিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। এখন আদালত স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর মঙ্গলবার এমপির বাসায় মিটিং করে পূর্বের তারিখে নিয়োগ দেখানোর ‘রেজুলেশন’ করার পরিকল্পনা করছেন অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর।
কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য ফরিদুল চেয়ারম্যান পূর্বদেশকে বলেন, ‘আগামীকাল (মঙ্গলবার) মিটিং আছে কি না জানি না। তবে অধ্যক্ষ আমাকে জানিয়েছেন এমপি সাহেব দাওয়াত দিয়েছেন সকালে বাসায় যাওয়ার জন্য। আমরা সবাই যাবো।’
উপাধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পরীক্ষার্থী একজন জানিয়েছিলেন বিধি মোতাবেক উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের কাউকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। তখন বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিতে বললে অধ্যক্ষ জানান আইনে কোনো সমস্যা নেই। তারপর নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে বলেছিলেন এমপি সাহেব।’