‘সিআরবিতে বাণিজ্যিক হাসপাতাল চাই না’

8

বিভিন্ন গণমাধ্যমে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেনের চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দফতর সংলগ্ন সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ করা হবেই বক্ত্যব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সংসদ। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি এ্যানি সেন এবং সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, জনগণের স্বার্থকে উপেক্ষা করে জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতনভুক্ত কর্মচারী রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন “হাসপাতাল স্থাপন হবেই” বলে ঘোষণা দিয়েছেন তা জনগণের সাথে উদ্ধতার সামিল। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। তীব্র জনবিক্ষোভের পরেও প্রশাসনের এমন গোয়ার্তুমীর প্রধান উদ্দেশ্যই হলো বাণিজ্য। সরকার এর আগেও সুন্দরবন, মহেশখালী সহ সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ও পরিবেশ বিধ্বংসী প্রকল্প অনুমোদন করেছে। সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তাবনা মূলত এরই ধারাবাহিকতা মাত্র। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘শত বিলুপ্ত প্রজাতির উদ্ভিদের অভায়রণ্য সিআরবি চটগ্রামের প্রাকৃতিক অক্সিজেন প্ল্যান্ট। এখানে হাসপাতাল প্রকল্পটি হলে একে ঘিরে আশেপাশের এলাকায় ফার্মাসি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার সহ নানান প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। যার ফলে পরিবেশ দূষণসহ পুরো এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক বলয় হুমকির মুখে পড়বে। এছাড়া বৃটিশবিরোধী সংগ্রামের সূতিকাগার সিআরবিকে সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো একাত্তরের রণাঙ্গনের শহীদের কবর, শহীদের নামে কলোনি, শহীদের নামে যে সড়ক সেই জমি তারা বেসরকারি হাসপাতালকে বরাদ্দ দিয়েছে। এটা এদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের শহীদদের প্রতি চরম অবমাননা। এছাড়া নানান প্রাণবৈচিত্রের চারণভূমি সিআরবি এলাকাটি দি প্রটেকশন অব দি ওয়ার্ল্ড কালচারাল এন্ড ন্যাচারাল হেরিটেজ কনভেনশন ১৯৭২ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সুরক্ষিত এলাকার অধিভুক্ত এবং ইন্টিকুইটি এক্ট ১৯৬৮ (পুরাকীর্তি আইন) এর বিধান অনুযায়ী বিশেষায়িত এলাকা। তাই সিআরবিতে যেকোন স্থাপনা করাই হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। আমরা মনে করি, চট্টগ্রামের হালিশহরে পরিত্যাক্ত হাজী ক্যাম্প বা বড় কুমিরায় পরিত্যাক্ত বক্ষ ব্যাধি হাসপাতালে শতভাগ সরকারি হাসপাতাল হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী চিকিৎসা সেবা পাবে। বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন দৃঢ় ভাবে বলতে চায়, চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত সিআরবিতে কেবল হাসপাতাল নয়, কোনও ধরনের স্থাপনা করতে দেয়া হবে না। অবিলম্বে চট্টগ্রামের ফুসফুস ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিকে সংরক্ষণের মাধ্যমে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতা রাজপথে নেমে দাবি আদায় করে নেবে।’