শেষ মুহূর্তের আচমকা গোলে শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বাড়লো উদয়নের

13

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নির্ধারিত সময় শেষ। ইনজুরি টাইমের ৩ মিনিটেরও দু’মিনিট শেষ। ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা উদয়ন সংঘের সবাই উল্লাস করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় আচমকা এক ঝড়। কাস্টমসের সাইফের বাড়ানো বল উদয়ন গোলমুখে পড়লে গোলকিপার ইছহাক এবং রক্ষণভাগের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। শেষ মুহূর্তে কিপার ইছহাক হাত দিয়ে বল ঠেকাতে চেষ্টা করলেও বল তার হাত ছুঁইয়ে গোল লাইন অতিক্রম করে। খেলায় আসে সমতা (১-১)। এরপর উদয়ন আক্রমনে উঠলেও তাতে কাজ হয়নি। রেফারী নাছির উদ্দিনের শেষ বাঁশী বেজে উঠে। তবে খেলা শেষে হতাশ উদয়ন সংঘের ডাগআউটে বিশৃংখলা দেখা দেয়। দলের কর্মকর্তা, খেলোয়াড় এবং দর্শক সবাই উত্তেজিত হয়ে কোচ আনোয়ার হোসেনকে একযোগে দোষারোপ করতে দেখা যায়। তাদের দুয়ো ধ্বনি আর মারমুখি আচরণে অস্বস্তিকর এক পরিবেশ তৈরি হয়। তাদের অভিযোগ কোচ খেলোয়াড় বদল ঠিকভাবে করেননি।
এ ড্রয়ের ফলে জিপিএইচ ইস্পাত প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের শিরোপা জয়ের অপেক্ষা বেড়েছে মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘের। এখন উদয়নকে শিরোপা জয়ের জন্য লিগে নিজেদের শেষ খেলা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আগামী ১২ অক্টোবর উদয়ন মোকাবেলা করবে বিসিআইসিকে। এ খেলায় জিতলেই মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘের লিগ শিরোপা নিশ্চিত হবে। ৮ খেলা শেষে উদয়ন সংঘের পয়েন্ট হয়েছে এখন ১৬। শিরোপার জন্য শেষ খেলায় জিতলে পয়েন্ট দাঁড়াবে ১৯। এই পয়েন্ট নিয়েই তারা চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে। কাছাকাছি থাকা ব্রাদার্স ইউনিয়ন ৮ খেলায় ১৫ পয়েন্ট পেয়েছে। শেষ খেলা জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ১৮। কোয়ালিটির পয়েন্ট ১৪। তারাও শেষ খেলায় জিতলে হবে ১৭ পয়েন্ট। অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশন এবং শতদলের আছে ৭ খেলা শেষে ১২ পয়েন্ট। তারা বাকি দুটি ম্যাচ জিতলে পাবে ১৮ পয়েন্ট। সুতরাং অন্যদের চাইতে উদয়নের সুযোগটাই বেশি। শেষ ম্যাচ জিতলেই তারা শিরোপা নিজেদের করে নিতে পারবে। আর যদি ড্র কিংবা পরাজিত হয় তবে শিরোপার আশা ত্যাগ করতে হবে উদয়নকে।
গতকাল মাঠে নামার আগে উদয়নের পয়েন্ট ছিল ৭ খেলায় ১৫। কাস্টমসকে হারালে পয়েন্ট হতো ১৮। এতেই তারা শিরোপার দ্বারপ্রান্তে চলে যেতো। এমন প্রত্যাশা নিয়েই মাঠে নেমেছিল মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘ। গোল করে এগিয়েও গিয়েছিল ঠিক মতো। কিন্তু খেলার শেষ দিকে এসে হতাশায় ডুবতে হয় তাদের। খেলা ড্র হয়ে যায়।
গতকাল খেলার শুরু থেকেই মাদারবাড়ী উদয়ন সংঘ চাপ সৃষ্টি করে প্রতিপক্ষ কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাবের উপর। ২৬ মিনিটে গোল পায় উদয়ন সংঘ। মামুনের বাড়ানো বল বক্সে ড্রপ খায়। কাস্টমস কিপার মেহেদী বল গ্রিপে না নিয়ে ঠেকিয়ে দেন। বল যায় সামনে। আর সামনেই ছিলেন সুযোগ সন্ধানী তানিন, গোল করতে ভুল করেননি (১-০)।
এক গোলে এগিয়ে থাকা উদয়ন সংঘ দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে কাস্টমসের চ্যালেঞ্জের সামনে পড়ে। তারাও দুই উইং দিয়ে মাঝেই মাঝেই আক্রমনে উঠতে থাকে। ৬১ মিনিটে সাইফের শট সাইডবার ঘেষে চলে যায়। ৬৭ মিনিটে উদয়নের নাহিয়ান মিস করেন। ৮৫ মিনিটে কাস্টমসের আক্রমনে বল ধরে নেন উদয়ন কিপার ইছহাক। কাস্টমস এসময় বেশ চাপ সৃষ্টি করে উদয়নের রক্ষণভাগের উপর। ইনজুরি টাইমের শেষ মুহূর্তে অপ্রত্যাশিত কাÐ ঘটিয়ে নিজেদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ায় তারা। গতকালের খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন কাস্টমস স্পোর্টস ক্লাবের সাইফ। তার হাতে ক্রেস্ট ও প্রাইজমানি তুলে দেন সিজেকেএস কাউন্সিলর ডেরিক রেন্ডল্ফ। আজকের খেলা- মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র বনাম চট্টগ্রাম মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব বøুজ (৩টা)।