মাধ্যমিকের সঙ্গে মিল নেই প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের

51

 

মাধ্যমিকের সঙ্গে সমন্বয় না করে প্রাথমিক স্তরের বিস্তারিত শিক্ষাক্রম অনুমোদন দিয়েছে প্রাথমিকের জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটি (এনসিসিসি)। যেখানে মাধ্যমিক স্তরের শেখানোর প্রক্রিয়ার (শিখন) সঙ্গে প্রাথমিক স্তরে শেখানোর প্রক্রিয়ায় মিল নেই। মাধ্যমিকের নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে সার্বিকভাবে যোগ্য করে তোলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর প্রাথমিকে অ্যাকটিভ লার্নিংয়ের (সক্রিয় শিখন) ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
দেশের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরিবর্তন এনে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত নতুন শিক্ষাক্রম সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়, প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে এ বছরের শুরুতে নির্ধারিতসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষামূলকভাবে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। এরপর আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণিতে বাস্তবায়ন শুরু হবে। এভাবে ২০২৭ সালে দ্বাদশ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে এ পর্ব শেষ হবে।
গত ২২ ফেব্রæয়ারি থেকে মাধ্যমিক স্তরের ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ওপর নতুন শিক্ষাক্রম পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন শুরু হয়। এই সময় থেকে ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেণিতেও পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন শুরুর কথা থাকলেও এখন এনসিটিবির সূত্র বলছে, ঈদুল ফিতরের আগে প্রাথমিকে তা শুরুর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। গত ২৩ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের নেতৃত্বাধীন এনসিসিসিতে প্রাথমিকের স্তরের শিক্ষাক্রম অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিকের এমন সিদ্ধান্তে প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরের নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের মূল স্বপ্ন ও উদ্দেশ্য পূরণ হবে না বরং উল্টো কিছু সমস্যার আশঙ্কা আছে বলে মনে করছেন নতুন শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সঙ্গে যুক্তরা। কারণ, শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক স্তরে একভাবে শিখে যখন মাধ্যমিকে পড়তে যাবে, তখন খাপ খাওয়াতে অসুবিধা হবে। শিক্ষাবিদদের মতে, অ্যাকটিভ লার্নিং শিক্ষার্থীকে শিখনের ওপর আত্মনিয়ন্ত্রণ চর্চা করার সুযোগ করে দেয়, যা মূলত অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন ধারণার একটি মাত্র উপায়। আর অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনে অনেকগুলো ধাপ ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ অর্জন করে তা বাস্তবে প্রয়োগ করার অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পায়। এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) মো. মশিউজ্জামান বলেন, প্রাথমিক কর্তৃপক্ষ বলেছে নতুন শিক্ষাক্রমের রূপরেখা অনুযায়ী প্রাথমিকের শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করবে। এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, এনসিসিসি সভায় আলোচনা হয়েছে।
পরে যদি সংশোধনের প্রয়োজন হয়, তখন তা করা হবে। নতুন করে শিক্ষাক্রম হচ্ছে না। আগের শিক্ষাক্রমকেই পরিমার্জন করা হয়েছে।
অ্যাকটিভ লার্নিং হলেও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখনের সুযোগও রাখা হয়েছে। এখন বিস্তারিত শিক্ষাক্রম অনুমোদন দেওয়ার মাধ্যমে বই লেখা হবে। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন শুরু হবে।