মহাসড়ক থেকে পণ্য লোপাট কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা জরুরি

12

দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদন হতে জানা যায়-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হতে বিভিন্ন পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান হতে বিভিন্ন পণ্য ডাকাতি হচ্ছে। একটি সংঘবদ্ধ চক্র একাজ করছে। দেশে আগামীতে একটি মন্দার আশঙ্কা রয়েছে। মন্দা মোকাবেলায় সরকার এখন হতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ শুরু করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে কৃষি ও শিল্পপণ্য উৎপাদনের দিকে জোর দিচ্ছেন। কৃষি ক্ষেত্রে দেশের মানুষ ব্যাপক হারে উন্নয়ন ঘটাতে পারলে দেশে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হবে না। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে সে দিকে জনগণকে সচেতন করে যাচ্ছেন। সমগ্র বিশ^ব্যাপী যুদ্ধের দামামা থামছে না। একদিকে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, অন্যদিকে ফিলিস্তিন ইসরাইল যুদ্ধ। আবার তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে যুদ্ধ লাগি লাগি করছে। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সমগ্র বিশে^ জ¦ালানি ও খাদ্যের সংকট তীব্রতর হয়ে উঠেছে। তার উপর তৃতীয় বিশ^যুদ্ধ তথা পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা ও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। আমেরিকা ও তার মিত্ররা বিশে^ একক আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে মারিয়া। বিশ^ব্যাপী একটি পক্ষ অর্থনৈতিক শোষণে ব্যস্ত। অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে বিশ্বে প্রথম ও দ্বিতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হতে দেখা গেছে। দ্বিতীয় বিশ^ যুদ্ধের পর বিজয়ী শক্তি সমগ্র বিশ^কে হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয়। দীর্ঘ দিন পর অর্থনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তি অর্জন ও ধরে রাখার স্বার্থে সমগ্র বিশ^ দু’ভাগে বিভক্ত হচ্ছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত শক্তি কোনভাবে অর্থনীতির চাকা হাত ছাড়া করতে নারাজ। বিশে^র ধনি ও দরিদ্র দেশ গুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ভারসাম্য আসছে না কোনভাবেই। এমতাবস্থায় একপক্ষ টিকে থাকতে অন্যপক্ষ নতুন অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে মরিয়া। বিশ^ অর্থনীতির নোংরা খেলায় দরিদ্র দেশগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক। অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশে^র মধ্যেও মুদ্রাষ্ফিতি: জ¦ালানি সংকট ইত্যাদিতে অর্থনীতির ধ্বংস পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার প্রভাবে আমাদের দেশও নানা সমস্যায় ভোগছে।
সংকটাপন্ন অস্থির বিশে^র প্রেক্ষাপটে দেশের মহাসড়কে পণ্য বোঝাই পরিবহনের পণ্য ডাকাতি বা লোপাট কার্যক্রম দেশের স্থিতিশীলতায় নতুন অরাজক অবস্থা সৃষ্টি করবে। পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানা যায় দেশের ব্যবসায়ীরা পণ্য বোঝাই পরিবহন ডাকাতি ও পণ্য লোপাটের কারণে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় ভোগছে। খাদ্যদ্রব্য বোঝাই পরিবহনে ডাকাতি হলে তার সরাসরি প্রভাব বাজার ব্যবস্থায় পড়বে। এমতাবস্থায় শুধু মহাসড়ক নয়, সমগ্র দেশের সড়ক গুলোতে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের কার্যকরভাবে এগিয়ে আসতে হবে। ১ কোটি ১৩ লাখ টাকার রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য নিয়ে চালক ও হেল্পার উধাও হয়ে যাওয়া উদ্বেগের কারণ বই কি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ভূয়া কাগজপত্রধারী চালক হেল্পারের হাতে কোটি টাকার পণ্য পরিবহনের দায়িত্ব প্রদান কেন করলো তাও খতিয়ে দেখা জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোটি টাকার খাদ্য দ্রব্য মহাসড়ক কিংবা দেশের যেকোন সড়ক হতে উধাও হতে পারতো। মালামাল পরিবহনকার্য্যে সংশ্লিষ্টদের আরো সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। তাছাড়া ডাকাত দলের সাথে যোগসাজসে পণ্য হাত ছাড়া কিংবা ডাকাতি হবে কিনা তাও সংশ্লিষ্টদের মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। দেশের অপরাধিরা নতুন নতুন কৌশলে অপরাধ কর্ম করে যাচ্ছে। ডাকাতরাও অভিনব পন্থায় ডাকাতি করতে শুরু করেছে। সড়কে পণ্যবাহী পরিবহনের মালামাল নিশ্চিতভাবে গন্তব্যে পৌঁছানোর বিষয়ে সবপক্ষের দায়বদ্ধতার পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের তৎপরতা কার্যকর রাখতে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ দিতে হবে। সড়ক মহাসড়কে খাদ্য ও পণ্য বোঝাই পরিবহন হতে ব্যবসায়ীদের রক্ষা করার পাশাপাশি দেশের সার্বিক পরিবহন শ্রমিকদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।