প্রবীণদের জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন : বিভাগীয় কমিশনার

17

৩২তম আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস গত ১ অক্টোবর যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করেছে চট্টগ্রাম সমাজসেবা অধিদফতর। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘পরিবর্তিত বিশ্বে প্রবীণ ব্যক্তির সহনশীলতা’। চট্টগ্রাম জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের আয়োজনে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ চত্বরে সমাবেশ, বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়েছে। সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রবীণদের সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমরা প্রবীণ দিবস পালন করি প্রবীণদের সম্মাননা দেওয়ার জন্য। আলাদা করে ভাবার জন্য এবং আমাদের চিন্তার জগতকে খোরাক দেওয়ার জন্য দিবস পালন করা হয়। প্রবীণ দিবস সমাজের প্রত্যেকটা লোকের এবং প্রত্যেকটা পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত। একসময় আমরা প্রত্যেকে শিশু ছিলাম, কিশোর ছিলাম। মা-বাবারা আদর ও যত্ন করে আমাদের বড় করেছেন। পিতা মাতার আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকলেও সর্বোচ্চ শ্রম দিয়ে চেষ্টা করেছেন ছেলে মেয়ের ভরনপোষণ মেটাতে। কিন্তু চাকরি পাওয়ার পর ছেলে নতুন জীবন শুরু করে। একসময় দেখা যায় অনেকে সামর্থ্য না থাকার কারণে মা বাবার ভরনপোষণ ঠিকমত করতে পারে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তাঁদের দূরে সরিয়ে দেয়। এ সব কারণে দেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে বৃদ্ধ নিবাস, শান্তি নিবাস নামে বিভিন্ন প্রকার প্রতিষ্ঠান। দেশে প্রবীণদের সংখ্যা বাড়ছে। তাই সরকারের পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান প্রবীণদের জন্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক কাজী নাজিমুল ইসলাম। এছাড়াও মা ও শিশু হাসপাতালের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন, আঞ্চলিক তথ্য অফিস চট্টগ্রাম এর সিনিয়র তথ্য অফিসার মারুফা রহমান ঈমা, জয়ন্তী লালা বিশিষ্ট সংগীত ব্যক্তিত্ব, ফরিদুল আলমসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ বক্তৃতা করেন।

সিনিয়র জার্নালিস্টস ফোরাম
আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে সিনিয়র জার্নালিস্টস্ ফোরাম চট্টগ্রাম এর উদ্যোগে ১ অক্টোবর বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামের আহব্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকতের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ফোরামের সদস্য সচিব, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকার সিনিয়র সহ-সম্পাদক স.ম. ইব্রাহিম। ফোরামের যুগ্ম সদস্য সচিব ও দৈনিক আজাদীর সাবেক সহ-সম্পাদক সাইফুদ্দিন মো. খালেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ফোরামের উপদেষ্টা, দৈনিক পূর্বকোণের সাবেক প্রধান সহ-সম্পাদক ও বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি ইসকান্দার আলী চৌধুরী, উপদেষ্টা মাখন লাল সরকার, উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক পংকজ কুমার দস্তিদার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক কোষাধ্যক্ষ জামালুদ্দীন ইউসুফ, সাংবাদিক গোলাম সরওয়ার প্রমুখ।
সভায় বিভিন্ন বক্তা বলেন, দেশের প্রবীণ সাংবাদিক ও নাগরিকদের কল্যাণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ করা অতীব প্রয়োজনীয়। সুন্দর, উজ্জ্বল ও সুখকর আগামীর পথে অগ্রসর হতে হলে প্রবীণদের সাথে নিয়েই করতে হবে। দুঃখজনক যে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবীণরা আজ অবজ্ঞা, উপেক্ষা, বঞ্চনা ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সরকারি সেবা হাতের মুঠোয় বলা হলেও এই সেবা পেতে নাগরিকদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। কেউ নিজের বা পিতা-মাতার নাম ভুল করে না- সরকারি ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ভুল করে নাম ও পিতা-মাতার নাম লিখে নাগরিকদের হয়রানি করছে এবং এই নামগুলো শুদ্ধ ও সংশোধন করতে গেলে বিভিন্নভাবে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাম ও পিতা-মাতার নাম ও ঠিকানা সংশোধনের জন্য নাগরিকদের কাছে সহজ করার ব্যবস্থা নিতে সভায় আহবান জানানো হয়।
প্রবীণ সাংবাদিকদের অধিকার ও সুযোগ-সুবিধা সুরক্ষার লক্ষ্যে সিনিয়র জার্নালিস্টস্ ফোরাম গঠনের কথা ব্যক্ত করে বক্তারা বলেন, এই সংগঠন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক, অলাভজনক, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সামাজিক সংগঠন। প্রবীণ সাংবাদিকদের যে কোন সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য এই সংগঠন কার্যক্রম গ্রহণ করবে।
সভায় বলায় হয়, রাষ্ট্রের বা সরকারী কর্মচারীরা অবসর গ্রহণের পর পেনসনসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেলেও প্রবীণ সাংবাদিকতায় পেনসনসহ কোন ধরণের সুযোগ-সুবিধা পান না। ষাটোর্ধ্ব বয়সের সকল সাংবাদিককে পেনসনসহ প্রাপ্য সকল প্রকার সুযোগ, সুবিধা, অধিকার প্রদানের জন্য সভায় আহŸান জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি