চূড়ান্ত হয়নি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুইদিন ছুটির সিদ্ধান্ত

8

বিশ্বব্যাপী সংকটের কারণে দেশে জ্বালানি সাশ্রয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার। সময়সূচি দিয়ে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং দেওয়া এবং সরকারি-বেসরকারি অফিসে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার চেষ্টা চলছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে এখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করার কথা ভাবছে সরকার; যদিও তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। কোনো কোনো শিক্ষাবিদ বলেছেন, এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা যৌক্তিক হবে না। বরং এখন শিখনঘাটতি পূরণে যেসব পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, সেগুলো বাস্তবায়ন জরুরি। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে শিখনঘণ্টা ঠিক করে আগামী বছর থেকে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা ঠিক আছে বলে তারা মনে করেন। আবার কারও অভিমত, সাপ্তাহিক ছুটি এক দিন বাড়িয়ে দুই দিন করলে অ্যাসাইনমেন্ট (শিক্ষার্থীদের বাড়িতে নির্ধারিত কাজ দেওয়া) দিয়েও এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করার বিষয়টি সামনে এসেছে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির এক বক্তব্য থেকে। গত শুক্রবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তেই কোনো সিদ্ধান্তের কথা বলা যাচ্ছে না। হয়তো শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।
করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে টানা প্রায় ১৮ মাস সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরাসরি পাঠদান বন্ধ ছিল। তবে বন্ধের ওই সময়ে টেলিভিশন, রেডিও ও অনলাইনে ক্লাস নেওয়াসহ নানাভাবে শিক্ষার্থীদের শেখানোর কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা ছিল; যদিও এসব কার্যক্রমে সব এলাকার সব শিক্ষার্থী সমানভাবে অংশ নিতে পারেনি।
করোনা মহামারির মধ্যে গত বছর দেশের অর্ধেকের বেশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৪ লাখ ৮১ হাজার শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে ৪৭ হাজারের বেশি ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হয়েছে। আর শিশুশ্রমে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের (বেডু) সা¤প্রতিক এক গবেষণায় দেখা যায়, করোনার মহামারিকালে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের (বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়ছে) অর্ধেকেরও বেশির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে মধ্যম ও উচ্চমাত্রায় শিখনঘাটতি তৈরি হয়েছে, যা পূরণ করতে বলা হয় ওই গবেষণায়। তবে জেলা বিবেচনায় পার্বত্য অঞ্চলের তিন জেলায় পরিস্থিতি আরও খারাপ।