চবিতে বিশেষায়িত শিক্ষার সুযোগ ১২টি নতুন বিভাগ ও ১টি নতুন ইনস্টিটিউট চবি’র মর্যাদা বাড়াবে

19

চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় দেশের অন্যতম প্রধান পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়। অর্থশতকের অধিক সময়কাল ধরে দেশের প্রেক্ষাপটে চবি উচ্চতর শিক্ষা বিতরণ করে যাচ্ছে। পাহাড়ি প্রকৃতির অনন্য সুন্দর ক্যাম্পাসে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় শুরু থেকে বৈশি^ক প্রেক্ষাপটে গৌরব উজ্জ্বল ঐতিহ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। ড. জামাল নজরুল ইসলাম, প্রফেসর সৈয়দ আলী আহসান, ড. আবুহেনা মোস্তফা কামাল, ড. আনিসুজ্জামান, প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, ড. আবদুল করিমসহ বহু বিশ^খ্যাত পÐিত ব্যক্তি এ বিশ^বিদ্যালয়ে তাদের গবেষণা ও শিক্ষকতা জীবন অতিবাহিত করেছেন। যার ফলে দেশ-বিদেশে চবি’র সুনাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে দেশে বহু সরকারি বিশেষায়িত বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বিশেষায়িত সরকারি বিশ^বিদ্যালয় না হয়েও দেশে-বিদেশে প্রাচ্যের অক্সফোর্ট নামে খ্যাতি অর্জন করেছে। সরকারি সাধারণ বিশ^বিদ্যালয় হলেও বিশেষায়িত গবেষণায় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় কোন অংশে বিশেষায়িত বিশ^বিদ্যালয়ের চেয়ে কম না। যে কারণে অনেক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ে (বুয়েট) ভর্তির সুযোগ পাবার পরও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে দেখা যায়। সিলেট শাহ জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয় একটি বিশেষায়িত বিশ^বিদ্যালয়। কিন্তু এখানে সাধারণ বিশ^বিদ্যালয়ের বহু বিভাগ চালু রয়েছে। যার কারণে শাহজালালের বিজ্ঞান প্রযুক্তি গবেষণা পিছিয়ে পড়েনি। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের বহু বিভাগ রয়েছে। একই ভাবে চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়েও চুয়েট-বুয়েটের মতো বহু প্রকৌশল বিভাগের যাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তৎমধ্যে কম্পিউটার সাইন্স, অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স, মেরিন সায়েন্স, বায়ো কেমিস্ট্রিসহ বহু বিভাগ বিদ্যমান আছে। বুয়েট, চুয়েট, শাস্ট ইত্যাদি বিশেষায়িত বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ে যারা ভর্তির সুযোগ পায় না তারা চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়েও প্রকৌশল শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। এটা চট্টগ্রাম তথা সারা দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চতর শিক্ষার একটি বিশেষ সুযোগ। চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চবি’র ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষে আরো বহু নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। তারই ধারা বাহিকতায় চবি কর্তৃপক্ষ চবিতে ৩২টি নতুন বিভাগ ও ১টি ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব নিয়ে ছিল দেশে করোনা মহামারি শুরু হবার পূর্বে। ওই প্রস্তাব কার্যকর করা সম্ভ হয়নি করোনার জনিত, দীর্ঘদিন বিশ^ বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে। বর্তমানে চবি’র ডিনস কমিটির এক সভায় বিভিন্ন অনুষদের অধীনে ১২টি নতুন বিভাগ ও ইনস্টটিউট অব এনার্জি সায়েন্সসহ আধুনিক বিশেষায়িত বিভাগ খোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বরাবরে সুপারিশমালা পাঠিয়েছে। যার অনুমোদন পেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘাটতিও পূরণ করতে সক্ষম হবেÑএমন ধারণা শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের অধীনে ফিল্ম স্টাডিজ বিভাগ ও মুক্তিযুদ্ধ বিভাগ। বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে অ্যাপলাইড ম্যাথমেটিক্স ও ইনস্টিটিউট অব এনার্জি সায়েন্স। ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের অধীনে এন্ট্রাপ্রেনারশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন বিভাগ ও টুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ ও সোশ্যাল ওয়ার্কস বিভাগ। জীববিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্স বিভাগ। ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধীনে রোবটিক্স অ্যান্ড মেকট্রানিক্স বিভাগ ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। ফিশারিজ অনুষদের অধীনে পোর্ট অ্যান্ড শিপিং ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ও মেরিন জিওলোজি অ্যান্ড মাইনিং বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন চবি’র প্রস্তাবনা অনুকূল বিবেচনা করে চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়কে বিশেষায়িত উচ্চশিক্ষায় সমৃদ্ধ করবে এমন আশা সমগ্র চট্টগ্রামবাসীর।