প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ বলেছেন, সৃজনশীলতার নামে যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তাতে আগামী এক থেকে দুই দশক পরে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য বুদ্ধিদীপ্ত নাগরিক পাওয়া যাবে না।
গতকার শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন মিলনায়তনে ‘সন্ত্রাসবাদ: আইন ও বাস্তবতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এই শিক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার নানা দিক তুলে ধরে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় সেগুলোর দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। খবর বিডিনিউজের
অধ্যাপক রহমত বলেন, এই শিক্ষা ব্যবস্থা হচ্ছে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের আশান্বিত করতে পারছে না। সৃজনশীলতার নামে যা কিছু হচ্ছে এবং হয়েছে আমি মনে করি আগামী ২০ থেকে ৩০ বছর দেশ উন্নত বা বুদ্ধিদীপ্ত নাগরিক পাবে না রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, জনবিস্ফোরিত রাষ্ট্রে আমরা জানি না উচ্চ শিক্ষা নিয়ে কোথায় আমার ভাগ্য নির্ধারিত হবে। সবাই পড়ছে ক্যারিয়ার এডুকেশনে। সেখানে মূল্যবোধের ঘাটতি। এক ধরনের অতিশিক্ষা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, হচ্ছে। এতে তরুণ সমাজের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে হতাশা, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা।
“এই শিক্ষা দিয়ে আমরা মূল্যবোধ তৈরি করতে পারছি না। মূল্যবোধ যতটুকু তৈরি হয় সেটিও ধরে রাখতে পারছি না। শিক্ষা আছে কর্মসংস্থান নেই, এমন অনেক কিছু মিলিয়েই সন্ত্রাসবাদের জন্ম হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করতে হলে এগুলোকে বাদ দিলে হবে না।”
দেশে উন্নয়নের যে ধারা চলছে সেখানে সন্ত্রাসবাদই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক রহমত উল্লাহ। তিনি বলেন, “দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সামাজিক অবস্থার সম্পর্ক সাংঘর্ষিক। ক্যাসিনোর টাকা কোথা থেকে আসে, কালো টাকা কোথায় বিনিয়োগ হয়? আমি মনে করি, দ্রুত উন্নয়নের একটি বিরাট অংশ সন্ত্রাসবাদে বিনিয়োগ করা হয়। দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে অর্থনৈতিক-সামাজিক বৈষম্য, শ্রেণি বিভক্তি এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা সংঘর্ষের সৃষ্টি করছে। সেটিও সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিচ্ছে।