শিক্ষামেলা সুভাস সভ্য

89

‘মেলা’ শব্দর মেলা অর্থ; এর ব্যবহার বহুরূপ। মিলন-ই মেলার প্রাণ; মিলনমেলা, প্রাণের মেলা ইত্যাদি শব্দগুচ্ছে মেলার প্রধান রূপ-এর প্রকাশ ঘটে। প্রাণের সংযোগে মেলা হয়ে উঠে প্রাণময়- আনন্দ বিনোদনের অনন্য উপলক্ষ; যেমন বৈশাখীমেলা, বিজয়মেলা। অধুনা মেলার ওপর ল²ীরও নজর পড়ে; দেখা যায়, বিভিন্ন রকম বাণিজ্যমেলার রমরমা কারবার; কোনো কোনো ক্ষেত্রে বইমেলাতেও দেখা যায় ল²ীর লক্ষণ; বণিক বণিক ভাব। ‘মেলা’র রাজ্যে স¤প্রতি স¤পন্ন হয় এক স্বতন্ত্র সম্মিলন; নাম দেওয়া যায়- শিক্ষক কিংবা শিক্ষামেলা। আয়োজনে- বাঁশখালী সমিতি, চট্টগ্রাম; পরিকল্পনায়- সু ভা স(সুন্দর ভাবনা সভা)।
বাঁশখালী সমিতি, চট্টগ্রাম নিবন্ধিত সমবায় সংগঠন। উপজেলার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য সেবামূলক কাজে যুক্ত থাকা এবং যে কোনো জনকল্যাণমূলক কাজে ভ‚মিকা রাখার সুযোগ থাকলে যথাসম্ভব স¤পৃক্ত হওয়া সমিতির মূল কাজ।‘সু ভা স’- কোনো গতানুগতিক ধারার সংগঠন নয়, এ হলো শিক্ষা, ধর্ম ও সমাজসংশিষ্ট যৌথ কর্ম-উদ্যোগ, বিষয়ভিত্তিক কর্মসূচি পরিকল্পনার প্লাটফর্ম। আগ্রহী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাস্তবায়ন করা হয় ‘সু ভা স’-এর পরিকল্পনা।
মার্চ ২২, ২০১৯। দু’পর্বে দিনব্যাপী কর্মসূচি। ১ম পর্ব- বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, ‘স্যরের সম্মানে স্যার’ এবং ‘শিক্ষা মুক্তির মূল পথ’। ২য় পর্ব- দমানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে শিক্ষকের ভ‚মিকা’ শীর্ষক শিক্ষকপ্রশিক্ষণ কর্মশালা। ভ্যানু- বাঁশখালী উপজেলার বাণীগ্রাম সাধনপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়াম।
এ মূলত স্যার-সমাবেশ। অনুষ্ঠানে বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার ৩৮টি মাধ্যমিক শিক্ষালয়ের দু’শতাধিক স্যার/ মেডাম অংশ নেন, এর মধ্যে দু’টি সিনিয়র মাদ্রাসাও আছে। বাঁশখালী সমিতির পক্ষ থেকে উভয় উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্র পাঠানো হয়। অংশগ্রহণেচ্ছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তিন শতাধিক শিক্ষক শিক্ষয়িত্রীর নামের তালিকা পাঠান। আলোচ্য বিষয়ে প্রকাশিত হয় বত্রিশ পৃষ্ঠার পুস্তিকা। এতে অংশগ্রহণেচ্ছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকমন্ডলীর নামও প্রকাশ করা হয়।
দিনব্যাপী আয়োজন, পরিমিত আলোচনা; নানা পর্যায়ে পরিবেশিত হয় অনেক মূল্যবান কথা। পবিত্র কোরআন থেকে সুরা ইখলাস তেলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়, যার অর্থ, আমরা অনেকের জানা-
বলো, তিনি আল্লাহ (যিনি) অদ্বিতীয়। আল্লাহ সবার নির্ভরস্থল। তিনি কাউকে জন্ম দেন নি ও তাঁকেও কেউ জন্ম দেয় নি। আর তাঁর সমত‚ল্য কেউ নেই।
তেলোয়াত করেন আবু ওবায়দা আরাফাত, সাংগঠনিক সম্পাদক, বাঁশখালী সমিতি-চট্টগ্রাম।
বাণীগ্রাম হাইস্কুলের পক্ষ থেকে অতিথিবৃন্দকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়; সমিতির পক্ষ থেকে পড়া হয় সম্মাননাপত্র। আলাদা আদলে তৈরী দৃষ্টিনন্দন সম্মাননাপত্রেরকথাও চিত্তাকর্ষক। আলোচনার বিষয় স¤পর্কে বলেন
আলোচনার মূল বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরনে জসীম উদ্দীন আহমদ,সুভাস-সভ্য ও আয়োজক কমিটির সদস্যসচিব। প্রথম অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্যে বাঁশখালী সমিতি-চট্টগ্রাম এর উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান চৌধুরী বাবুল বলেন-
সকল ধর্মে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে আলোচ্য বিষয়ের ওপর যে পুস্তিকাটি প্রকাশিত হয়েছে তাতে কেবল ইসলাম ধর্মের কথাই হাইলাইট করা হয়েছে। বুঝা যায়, অন্য ধর্ম বিষয়ে প্রণেতার জ্ঞানস্বল্পতার কারণে সে দিকে আলোকপাত করা সম্ভব হয় নি; প্রণেতা এ দূর্বলতার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন ।’
প্রধান অতিথি, প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্ত্তী। পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা, চট্টগ্রাম এতদএলাকায় এ পর্যায়ের শিক্ষাঙ্গনের অভিভাবক। তাঁর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান বিশেষ মাত্রা লাভ করে। তিনি বলেন- মানসম্মত শিক্ষা বিস্তারে সরকারের যে পরিকল্পনা; যে কর্মযজ্ঞ, বাঁশখালী সমিতির আজকের আয়োজন যেন তারই অংশ।
প্রধান আলোচক প্রফেসর আহমদ হোছাইন, সাবেক চেয়ারম্যান, ফলিত পদার্থবিদ্যা ও ক¤িপউটার বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। আলোচ্য বিষয়ে তাঁর সুন্দর পর্যালোচনা আয়োজনে সৃষ্টি করে আলাদা আবেদন। তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন এই বলে-
আলোচ্য পুস্তিকায় মুক্তির কথা আছে; কার মুক্তি, কোথা থেকে মুক্তি তাও আছে। বলা হয়েছে, লোভ লালসা, পরশ্রীকাতরতা প্রভৃতি মুক্তির পথে প্রতিবন্ধকতা। এ রকম আরো বাঁধা আছে, যা এখানে আসেনি। যেমন, মিথ্যাচার ইত্যাদি, এ সব বিষয়েও আলোকপাত করা হলে ভালো হতো।
নির্ধারিত আলোচক মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান, লেখক ও শিক্ষাসংগঠক। শিক্ষাঙ্গনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার বিষয়ে তিনি জীবনের গল্প থেকে প্রকাশ করেন উদ্দীপনাময় অংশ-
স্যারের সম্মান সুরক্ষার বিষয়ে একটা ঘটনা বলি। আমার পরিচালিত শিক্ষালয়ে উদ্ভ‚ত এক পরিস্থিতিতে আমি সংশিষ্ট দায়ীজনদের ওপর আর্থিক জরিমানা আরোপ করি। এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য নানামুখী তদবির আসে। একজন শিক্ষকের সম্মান সমুন্নত রাখার জন্য আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকি; অনেক আপনজনের অনুরোধ উপেক্ষা করি।
বিশেষ আমন্ত্রণে আগত অতিথি, প্রফেসর এন কে আকবর হোসাইন, ক্যামেস্ট্রি বিভাগ প্রধান, চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম। তিনি বক্তৃতা দেননি, পরিবেশন করেন এক অনবদ্য কাব্যভাষণ। শ্রোতামÐলীর মনে যেন ঈষৎ পরিবর্তীত হয়ে অনুরণন তোলে বাংলা গানের কলি- ‘এই ভাষণ না যদি শেষ হয়, তবে বেশ হয়, তবে বেশ হয়।’ প্রফেসর আকবর বলেন-
গোসল করার জন্য এক বালতি জল যথেষ্ট। কিন্তু পুকুরে যদি এক বালতি পানি থাকে গোসল করা যায় না। একজন আদর্শ শিক্ষক বালতির পানি নয়, জল থৈ থৈ সরোবর, যেখানে শিক্ষার্থী মনের সুখে সাঁতার কাটবে, ডুবো খেলায় মাতবে; ক্লান্তহবে না, প্রশান্ত হবে।
বাঁশখালী সমিতি-চট্টগ্রামের সহ-সভাপতিঅ্যাড. এ এইচ এম জিয়া উদ্দিন প্রথম অধিবেশনে সভাপতির ভাষণে বলেন-
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে আমরা নাগরিক সমাজের দায়িত্ব আছে। সুনাগরিক সৃষ্টির কারিগর সম্মানীয় শিক্ষকসমাজ। আমাদের দেশে শিক্ষকতা পেশা তুলনামূলক বিচারে সুবিধাবঞ্চিত। শিক্ষাঙ্গনে মানসম্মত অবস্থা সৃষ্টির জন্য এই বঞ্চনার অবসান দরকার।

দ্বিতীয় অধিবেশন- শিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালা; উদ্বোধন করেন প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী, প্রধান অতিথি। বাঁশখালী সমিতি-চট্টগ্রামের সহ-সভাপতিমুসলেহ উদ্দিন মনসুর স্বাগত বক্তব্যে বলেন-
এখানে অনেক স্যার এসেছেন; হাইলদর আমার নানার বাড়ীর বশিরুজ্জামান চৌধুরী স্কুল থেকেও এসেছেন। কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ খুব দরকার। তাই এই অধিবেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চট্টগ্রাম টিচার্স ট্রেনিং কলেজের স্বনামধন্য প্রশিক্ষক জনাব শামসুদ্দীন শিশির এর অপূর্ব পরিচালনায় সর্বক্ষন প্রাণবন্তথাকে বাদজুমা অনুষ্ঠিত কর্মশালা।
স্যারের পদধুলি শিশির দিয়ে সাফ করতে পারার মধ্যে শামসুদ্দীন এর জীবনের স্বার্থকতা, প্রশিক্ষক যখন এমন চিত্তবাসনা প্রকাশ করেন তখন হলভরা প্রশিক্ষনার্থী শিক্ষকÐলীর মনোজগতে অন্য রকম দোলা লাগে। তাঁর উদ্দেশ্যে পঠিত সম্মাননাপত্র-
সম্মানীয় শামসুদ্দীন শিশির।
উষর মরুর ধূসর মাঝে একটি যদি নগর গড় একটি মানুষ মানুষ করা তাহার চেয়ে অনেক বড়। মানুষ গড়ার কারখানা, শিক্ষাদাতার অঙ্গনে দক্ষতা সৃষ্টির স্বনামধন্য প্রকৌশলী আপনি। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে শিক্ষকের ভ‚মিকা শীর্ষক অদ্যকার কর্মশালা পরিচালনায় আপনার সদয় সম্মতিতে অংশগ্রহণকারীমহল উদ্দীপিত; আপনার আগমনে বিশেষ অর্থবহতা লাভ করে আমাদের নগন্য আয়োজন।
শুভেচ্ছাপত্রের কথাগুলোর যেন ষোলোআনা প্রতিফলন ঘটে কর্মশালায়; পরিতৃপ্তি লাভ করেন সমবেত সকলে।
দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বাঁশখালী সমিতি-চট্টগ্রাম এর সভাপতি প্রফেসর ডা. প্রভাতচন্দ্র বড়–য়া। সমাপনী বক্তব্যে তিনি প্রকাশ করেন অমূল্য অভিমত-
জ্ঞানের আদি উৎস সনাতন ধর্মগ্রন্থ- বেদ,গীতা। আগেকার দিনে গুরুগৃহে জ্ঞান বিতরণ হতো; গুরু পর¤পরা জ্ঞানের ধারা প্রবাহিত। এটা এক বড় ব্যাপার। কোরআনেও পড়ার কথা আছে। আপনারা যারা এখানে এসেছেন, এই হিউমারভরা ক্লাস আপনাদের লংজিভিটি বাড়াবে। প্রত্যেক গ্রেট ম্যান-এর পেছনে আছেন একজন গ্রেটমা; এখানে আপনারা যারা মা, সন্তানকে একটু ত্যাগী হওয়ার জন্য শিক্ষা দেবেন।
কিছু কিছু আন্-কমন বিষয় এই অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য বাড়ায় । উপস্থিত প্রত্যেক স্যার/মেডাম এর জন্য বাঁশখালী সমিতির নামে বানানো একটি রাইটিং প্যাড, সমিতির মনোগ্রামখচিত একটা কলম, আলোচ্য বিষয়ে প্রণীত পুস্তিকা, স্যার নামক একটা ছোট বই, এই চার পদের গিফট এর ব্যবস্থা করা হয়। গিফটগুলো দেওয়ার জন্য বানানো হয় স্বল্পদামী টিসু ক্লথে হালকা ডিজাইনের সাদা ব্যাগ। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠাগারের জন্য বাঁশখালী সমিতির সৌজন্যে দু’টি স্যার বই ও অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রকাশিত পুস্তিকা উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। বনফুলের চাররঙা টোঙায় সকালের হালকা ফাস্টফুড নাস্তা ও সিঙ্গেল সাইজ বিশুদ্ধ পানির বোতল এই গিফটের ব্যাগে দিয়ে দেওয়ার ফলে এড়ানো যায় ঝক্কি; নিতান্ত নীরবে নিভৃতে স¤পন্ন হয় নাস্তা পরিবেশনার গতানুগতিক কোলাহলময় পর্ব, বেঁচে যায় মূল্যবান সময়।
যে যার সময় ও সুবিধামতো নাস্তা করেন। অধুনা অনেকে অনিবার্য কারণে মিষ্টি আইটেম এভয়েড করে থাকেন। এখানে কেউ এভয়েড করে থাকলে তা পরিত্যার্যের ঝুড়িতে যায়নি, ওই ব্যাগের মধ্যে রেখে দেওয়ার সুযোগ পান; হয়তো বাসায় ফিরে বাচ্চার হাতে তুলে দিয়েছেন বনফুলের বলকেক। অপচয় আল্লাহপাকের অপছন্দ। দখা যায়, ব্যাগ এখানে অপচয় রোধের সুযোগ সৃষ্টি করে।
ফেস্টুন এ জাতীয় অনুষ্ঠানে বিশেষ অনুষঙ্গ। স্যার সমাবেশের ফেস্টুনে একটি রবীন্দ্রবাণীতে ফুটে উঠে আয়োজনের মূল সুর। যেমন- ‘শিক্ষার সকলের চেয়ে বড় অঙ্গটা- বুঝাইয়া দেওয়া নহে, মনের মধ্যে ঘা দেওয়া। প্রশিক্ষণসামগ্রী হিসেবে দেওয়া রাইটিং প্যাডের প্রতি জোড়পাতার ফুটারে মুদ্রিত হয় শিক্ষাসংক্রান্ত কিছু মূল্যবান বাণী- কথা অমৃত। এ ছাড়া মলাটের ভিতরের পৃষ্ঠায় দেওয়া হয় মূর্খতার গিঁট খোলার চাবি, পাঁছ শব্দবিশিষ্ট ছোট্ট হাদিস- জিজ্ঞাসা করাই হলো অজ্ঞতার নিরসন। ( আবু দাউদ)। পেছনের মলাটে মুদ্রিত হয় স্যার আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এর কথা- একটা জাতি ছোট বড় অসংখ্য সংগঠনের নাম। এই সংগঠনগুলো সংখ্যায় যত বেশী হবে এবং শক্তিতে যত অপরাজেয় হবে ঐ জাতিও হবে তত অপ্রতিরোধ্য। সমিতির প্যাডে জাতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ রূপে প্রকাশ পেলো সংগঠনের নাম। বাস্তবোচিত প্রয়োগে পুরোনো উদ্ধৃতি সৃষ্টি করে আলাদা আবেদন।
বই হলো এমন এক মৌমাছি যা অন্যদের সুন্দর মন থেকে মধু সংগ্রহ করে পাঠকের জন্য নিয়ে আসে। – জেমস রাসেল, এই মূল্যবান বাণী ক্যাপশান করা হয় উপহারসামগ্র দেওয়া জন্য বানানো ব্যাগের ডিজাইনের ওপর। উপহার হিসেবে অন্যান্য সামগ্রীর মধ্যে একেকজনের ব্যাগে দেওয়া দু’টি কর পুস্তিকা। এ যেন প্রত্যেকের হাতে এক এক জোড়া মৌমাছি। বিশেষ অর্থবহতা লাভ করে ব্যাগের ক্যাপশান- বাণী চিরন্তনী।
আয়োজন সুন্দরভাবে স¤পন্ন হওয়ার পেছনে বিশেষ ভ‚মিকা রাখে অবকাঠামোগত সুবিধা। শতাব্দীপ্রাচীন বাণীগ্রাম হাইস্কুলের সুপরিসর সম্মিলনকক্ষ। হল পূর্ণ হলেও অসুবিধা হয়নি আসন প্রদানে; পূর্বপাশের বারান্দায় বসানো হয় চেয়ারের সারি।স্কুলের নবনির্মিত ভবনে রয়েছে পর্যাপ্ত ওয়াশরুমও প্রয়োজনীয় সেনিটেশন ব্যবস্থা। খোলামেলা কক্ষ; দু’টি দু’টি হাইবেঞ্চ একত্র করা হলে তৈরি হয় ডাইনিং টেবিলের চমৎকার বিকল্প।
ঘরোয়া আয়োজনে রান্না। সাদা ভাত; মাছ, মুরগী। গতানুগতিক সবজির বদল মাছের মাথার মুগডাল। ডিসপোজেবল প্যাকেট ও প্লেইটে পরিবেশন করা হয় টাটকা গরম লাঞ্চ । সাদাসিদে নরমেল মেনু। বিকেলে ওয়ান টাইম কাপে জনে জনে চা ও বাণীগ্রাম ¯েপশাল গজা; সারা দিনের আয়োজনে যৎসামান্য আপ্যায়ন। আইটেম কম্বিনেশন ও পরিবেশনা ক্যারিশমায় অনেকের অভিব্যক্তিতে প্রকাশ পায় পরিতৃপ্তি।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক শিক্ষক শিক্ষয়েত্রীর নামে দেওয়া হয় সনদপত্র। বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠান থেকে পাওয়া এই লুক্রেটিভ সনদপত্র স্মৃতিস্মারক হয়ে থাকবে অনেকের পারিবারিক আর্কাইভে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম-এ দেখা যায়, বাঁশখালীর নাটমুড়া পুকুরিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক জনাব মো. নুরুল ইসলামের সনদপত্র গ্রহণের ছবিতে বহু আপনজনের আন্তরিক অভিনন্দন, শুভকামনা। এ নিশ্চয়ই তাঁর অন্তরে প্রেরণা যোগাবে। এই পোস্ট কর্মসূচির কিছুটা স্বার্থকতা লাভের নমুনা; সমগ্র আয়োজনে আল্লাহপাকের অনুগ্রহ প্রাপ্তির মধ্যেত নিহিত প্রকৃত সফলতা।
বাঁশখালী সমিতি-চট্টগ্রাম এর সাধারণ স¤পাদক লায়ন এম আইয়ুব এর সাবলীল সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আগাগোড়া বিরাজ করে ছন্দময়তা।