ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস রচনা করেছেন ড. মঈনুদ্দিন

21

প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মঈনুদ্দিন আহমেদ খান ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস রচনায় ভারতীয় উপমহাদেশে অগ্রগামী মনীষী। তিনি রচনায় করেছেন ‘হিস্ট্রি অব দি ফরায়েজী মুভমেন্ট ইন বেঙ্গল’ এবং ‘তিতুমীর এন্ড হিজ ফলোয়ারস ইন বৃটিশ ইন্ডিয়ান রেকর্ডস’ নামে ঐতিহাসিক কালজয়ী গ্রন্থ। তাঁর মৌলিক গবেষণা গ্রন্থগুলো নবপ্রজন্মকে ইতিহাসের সঠিক সন্ধান দেবে। মুসলিম স্ট্রাগল ফর ফ্রীডম ইন বেঙ্গল, দি গ্রেট রিভোল্ট অব এইটিন ফিফটি সেভেন এন্ড দি মুসলিম অব বেঙ্গল, বৃটিশ ইন্ডিয়ান রেকডর্স রিলেইটিং টু দি ওয়াহাবী ট্রায়েল অব এইটিন-সিক্সটি ওয়ান, মুসলিম কমিউনিটিস অব সাউথ ইস্ট এশিয়া, পলিটিক্যাল ক্রাইসিস অব দি প্রেজেন্ট এইজ-ক্যাপিটালিজম, কম্যুনিজম এন্ড হোয়াট নেক্সট ইত্যাদি তাঁর এতিহাসিক গ্রন্থ। ড. মঈনুদ্দিন আহমেদ খান তাঁর মূল্যবান ইতিহাস গবেষণা এবং মূল্যবান গ্রন্থ প্রণয়নের ইতিহাসে তিনি কালজয়ী হয়ে থাকবেন। তাঁর ইতিহাস রচনার মধ্য দিয়ে হাজারো বছর পরেও এই প্রজন্মের মাঝে ড. মঈনুদ্দিন আহমেদ খান মৃত্যুঞ্জয়ী। চট্টগ্রামে জন্ম নেওয়া এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ আমাদের প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। ২৮ মে ২০২১ শুক্রবার রাত ৮টায় চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র (সিএইচআরসি)’র উদ্যোগে প্রফেসর ড. মঈনুদ্দিন আহমেদ খান স্মরণে ওয়েবিনারে এক শোকসভায় বিজ্ঞ আলোচকৃবৃন্দ উপরোক্ত কথাগুলো বলেছেন। চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্রের সভাপতি ইতিহাসবেত্তা সোহেল মো. ফখরুদ-দীনের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় এই ওয়েবিনার বক্তব্য রাখেন বর্ষীয়ান ইতিহাস গবেষক ও প্রাবন্ধিক নিযামুদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র সমিতির সভাপতি লায়ন শওকত আলী নূর, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রায়হান আজাদ, ডায়মন্ড সিমেন্ট লিমিটেডের ডিজিএম মোহাম্মদ আবদুর রহিম, অধ্যক্ষ ইউনুচ কুতুবী, মোহাম্মদ শফিউল আলম, কবি শাহানুর আলম প্রমুখ। উল্লেখ্য যে, প্রফেসর ড. মঈনুদ্দিন আহমদ খান ১৯২৬ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার ডিপুটি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ (সম্মান) প্রাপ্ত হন। ১৯৫১ সালে এমএ, ১৯৫৫ সালে কানাডার ম্যাকলীগ বিশ্ববিদ্যালয় ২য় বার এমএ ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬১ সালে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করে শিক্ষাকতা জীবন শুরু করেন। ১৯৭২ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগদেন। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা ডিরেক্টর জেনারেল ছিলেন। ১৯৯২ সালে তিনি চ.বি থেকে অবসরে আসেন। পরে তিনি সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে যোগদেন। তিনি চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র (সিএইচআরসি)’র সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৭টির অধিক ইতিহাসবিষয়ক মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি গত ২৮ মার্চ চট্টগ্রামের বাসভবনে সকালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।