বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল ফাইনালে দু’টি প্রাণবন্ত ম্যাচ চট্টগ্রাম সেরা হাটহাজারী ও পটিয়া উপজেলা

37

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দু’টি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ফাটাফাটি লড়াই, গোলহীনতার পর টাইব্রেকারের রক্ত হিমকরা উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টের চট্টগ্রাম জেলা পর্যায়ের খেলা। টাইব্রেকার নামক ভাগ্য পরীক্ষায় জয়ী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার সেরা উপজেলার সম্মান অর্জন করেছে বালক বিভাগে হাটহাজারী উপজেলা ও বালিকা বিভাগে পাটিয়া উপজেলা। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার স্মরণে আয়োজিত এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে উন্নীত ৪ উপজেলার চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এর নেতৃত্বে বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী এম. এ আজিজ স্টেডিয়ামে এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্ঠি করে।
গতকাল এম. এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোল্ডকাপ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে হাটহাজারী উপজেলা টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলের ব্যবধানে বাঁশখালী উপজেলাকে পরাজিত করে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে নির্ধারিত সময়ে কেউ কারো জালে বল ফেলতে পারেনি। প্রথমার্ধে বাঁশখালী ও দ্বিতীয়ার্ধে হাটহাজারীর প্রাধান্য বিস্তৃত এ ম্যাচে দু’দলই বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ সৃষ্টি করলেও ফিনিশিং দুর্বলতায় গোলের বন্ধ্যাত্ব ঘোচেনি। টাইব্রেকারে জয়ী দলের হয়ে গোল করেন উসমান, মাহমুদ, শ্রাবন, মিজান ও আসাদ এবং বিজিত দলের লোকমান, তানজিবুল, রানা ও হাবিব গোল করেন।28
জয় নিশ্চিত হওয়ার পর হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম, নির্বাহী কর্মকর্তা মো: রুহুল আমিন ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাফরের নেতৃত্বে মাঠে উল্লসিত হাটহাজারীবাসীর এক আনন্দ-উল্লাসের এক অভুতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। এর আগে অনুষ্ঠিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকাপ অনূর্ধ্ব-১৭ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে প্রত্যাশিত নৈপুণ্য প্রদর্শনে ব্যর্থ হয় রাউজান। তাদের সেরা খেলোয়াড় মনি দাশ এ ম্যাচে নিজের এতদিনকার জার্সি (৭) পরিবর্তন করে ১৩ নম্বর জার্সি পরে নামেন। এই ‘আনলাকি থার্টিন’ পরে সে টাইব্রেকারেও গোল করতে ব্যর্থ হয়।
অপরদিকে অন্তুর নেতৃত্বে প্রতিপক্ষকে সুবিধা করতে দেয়নি ডা. সাইফুল-হোসেনের দল। গোলহীন ম্যাচের পর পটিয়া উপজেলা ৪-৩ গোলের ব্যবধানে রাউজান উপজেলার বিরুদ্ধে জয়লাভ করে। জয়ী দলের পক্ষে অন্তু, জান্নাতুল, সাদিয়া ও এ্যানি গোল করেন। অন্যদিকে বিজিত দলের হয়ে গোল করেন মনি, শারমিন ও কনিকা।
বালক গ্রæপে হাটহাজারী উপজেলার জামশেদ সেরা খেলোয়াড়, উসমান ৪টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং বালিকা গ্রæপে পটিয়া উপজেলার অন্তু সেরা খেলোয়াড়, আনোয়ারা উপজেলার সাদিয়া ৬টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলাদাতা হিসেবে বিশেষভাবে পুরস্কৃত হন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চ্যাম্পিয়ন দলগুলোকে দশ হাজার টাকা এবং রানার্স আপ দলগুলোকে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এছাড়া সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আ.জ.ম নাছির উদ্দীন চ্যাম্পিয়ন দলগুলোকে পাঁচ হাজার এবং রানার্স আপ দলগুলোকে তিন হাজার করে অর্থ পুরস্কার প্রদান করেন। হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম বালক চ্যাম্পিয়ন দলকে নগদ ১০ হাজার ও রানার্স আপ দলকে ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। এ ছাড়াও সিজেকেএস সহ-সভাপতি এ.কে.এম এহসানুল হায়দার চৌধুরী (বাবুল) রাউজান উপজেলা বালিকা দলকে নগদ অর্থ প্রদান করেন।
খেলা শেষে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো: কামরুল হাসান এনডিসি প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণ করেন। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও সিজেকেএস সভাপতি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং সিজেকেএস কার্যনির্বাহী সদস্য হাসান মুরাদ বিপ্লবের সঞ্চালনায় সমাপনী অনুষ্ঠানে টুর্নামেন্টের আহবায়ক, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস.এম জাকারিয়া, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুল, সিজেকেএস সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আ.জ.ম নাছির উদ্দীন, রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ, হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: রুহুল আমিন, বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সাইদুজ্জামান চৌধুরী, হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান রাশেদুল আলম, সিজেকেএস সহ-সভাপতি আলহাজ্ব দিদারুল আলম চৌধুরী, এ.কে.এম এহসানুল হায়দার চৌধুরী (বাবুল) ও মো: হাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দীন মো: আলমগীর, সিডিএফএ সভাপতি এস.এম শহীদুল ইসলাম, সিজেকেএস যুগ্ম সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও মোঃ মশিউর রহমান চৌধুরী, সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য আ.ন.ম ওয়াহিদ দুলাল, গোলাম মহিউদ্দীন হাসান, মোহা: শাহজাহান, জমির উদ্দিনবুলু, মো: দিদারুল আলম, প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য্য, মো: হারুন আল রশীদ, রেখা আলম চৌধুরী, টুর্নামেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মনোরঞ্জন দে, সিজেকেএস কাউন্সিলর আকতারুজ্জামান, ডা. সাইফুল আলম, প্রবীণ কুমার ঘোষ, এনামুল হক, রায়হান উদ্দিন রুবেল, কাজী জসিম উদ্দিন, আলী হাসান রাজু, জাফর ইকবাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।