নদীর স্রোতের মত ভাষার গতি চির প্রবাহমান ও অপ্রতিরোধ্য

248

একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সন্দীপনা কেন্দ্রীয় সংসদের উদ্যোগে প্রতি বছরের ন্যায় ৪ দিনের কর্মসূচীর ৩য় দিনের অনুষ্ঠান ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় শুরু হয়। বায়ান্নে ভাষা আন্দোলনের শহীদানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাষার গান গেয়ে কর্মসূচীর সূচনা করেন সন্দীপনা সংগীত দলের শিল্পীরা। কর্মসূচীর উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী ড. মনজুর উল আমিন চৌধুরী। সন্দীপনার উপদেষ্টা সাংবাদিক বেলায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শুরুতে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন অধ্যক্ষ শেখ এ রাজ্জাক রাজু। সম্মানিত অতিথি-আলোচকদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট ভৌত বিজ্ঞানী চ.বি অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন, রিসার্চ সোসাইটি (ভারত) এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দেবকন্যা সেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক মিনতি দত্ত মিশ্র, খ্যাতিমান বস্ত্র-নকশা শিল্পী রওশন আরা চৌধুরী, প্রধান শিক্ষক বাবুল কান্তি দাশ, বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক ও শিল্পী এম.এ হাশেম, সংগঠক জসিম উদ্দীন চৌধুরী, প্রধান শিক্ষক কবি তরণী কুমার সেন, সংগঠক মোশাররফ হোসেন খান রুনু, নাট্যকর্মী জাহানারা পারুল। শুরুতে শুভে”ছা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ভাস্কর ডি.কে দাশ মামুন।
সন্দীপনার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন পরিষদ-২০১৯ এর আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী’র সঞ্চালনায় বক্তব্যে বক্তারা বলেন, বায়ান্নে ভাষার জন্য যাঁরা অকাতরে প্রাণ দিয়ে গেলেন তাঁদের বদৌলতে আজকে বাঙালির বাংলাভাষা। শত ত্যাগের মহিমায় মাতৃভাষার জন্য যে ইতিহাস বাঙালি জাতি রচনা করেছে তা বিশ্ব-ইতিহাসে বিরল। সেই প্রেরণায় বাঙালি তার মায়ের ভাষা, স্বাধিকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য একাত্তরে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন।
ভাষার প্রবাহমানতা আর সারল্য এঁকেবেঁকে চলা নদীর মতো- তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নেই। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা বাঙালির টুটি চেপে ধরে মায়ের ভাষা কেঁড়ে নিতে চেয়েছিল। আত্মবলিদানকারীদের রক্তে ঢাকার রাজপথে যে লাল আলপনা তাঁরা এঁকেছিল তা আজ বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে বাংলা ভাষা দিবস আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কেউ আর দুঃশাসন, নীপিড়নে মায়ের ভাষার আব্রু ছিনিয়ে নিতে পারবে না। কেননা, প্রতিটি মানুষের মায়ের ভাষা তার প্রাণের চেয়েও দামী।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের বিশাল জনগোষ্ঠীর আরো কিছু কিছু ভাষা বিদ্যমান আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ করে এদেশে বসবাসকারী নৃগোষ্ঠীদের মাতৃভাষায় পাঠাভ্যাসের সুযোগ করে দিয়ে সকল স্তরের ভাষার প্রতি সম মমত্ব প্রদর্শন করেছেন। এই দৃষ্টান্ত জগতে বিরল।
মায়ের ভাষাকে বুকে নিয়ে সকল বিভ্রান্তি এড়িয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সোনার বাংলা নির্মাণে ভূমিকা রাখতে হবে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন শিল্পী এম.এ হাশেম, শিল্পী স্বপন কুমার দাশ, শিল্পী বৃষ্টি দাশ, ডা. শিউলী চৌধুরী, দেবেন্দ্র দাশ দেবু, রতন কুমার রাহা, শিল্পী সমীর চন্দ্র সেন, শিল্পী শহীদ ফারুকী, শিল্পী এস.এম ফরিদুল হক, শিল্পী রূপম মুৎসুদ্দী, শিল্পী উজ্জ্বল সিংহ, শিল্পী হানিফুল ইসলাম প্রমুখ।