ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে উগ্রপন্থীর বাড়িতে তল্লাশি

51

ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে হামলাকারীর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকা সন্দেহে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী সংগঠন ‘আইডেন্টিটারিয়ান মুভমেন্ট অব অস্ট্রিয়া’ এর প্রধানের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে অস্ট্রীয় পুলিশ। ওই অভিযানে কিছু ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস জব্দ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তির নাম মার্টিন সেলনের। মঙ্গলবার অস্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানিয়েছে। সেলনেরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে জানিয়েছেন, সোমবার তার অ্যাপার্টমেন্টে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চ মসজিদে হামলায় সংশ্লিষ্টতা থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি।
১৫ মার্চ অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। শহরের হাগলি পার্কমুখী সড়ক ডিনস এভিনিউয়ের আল নূর মসজিদসহ লিনউডের আরেকটি মসজিদে তার তান্ডবের বলি হয় অর্ধশত মানুষ। ব্রেন্টন ট্যারান্টের মধ্যে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী প্রবণতা পাওয়া গেছে। সে ট্যারান্টের সঙ্গে ‘আইডেন্টিটারিয়ান মুভমেন্ট অব অস্ট্রিয়া’ এর প্রধান মার্টিন সেলনেরের যোগসাজশ রয়েছে কিনা তা জানতে তদন্ত করছে অস্ট্রীয় পুলিশ। এরই অংশ হিসেবে তার বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
মার্টিন সেলনেরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ট্যারান্ট নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সে প্রচুর পরিমাণ অর্থ সহায়তা পেতো। আর ক্রাইস্টচার্চের মসজিদের সন্দেহভাজন হামলাকারীর নামের শেষ অংশও ট্যারান্ট। ক্রাইস্টচার্চের হামলাকারীই মার্টিন সেলনরকে অর্থ সহায়তা দিতো কিনা কিংবা তাদের দুইজনের মধ্যে কোনও যোগসাজশ ছিল কিনা সে ব্যাপারে তদন্তের অংশ হিসেবে সেলনরের বাড়ি তল্লাশি করতে যায় পুলিশ। অস্ট্রিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ক্রিস্টোফ পোয়েলজল ২৬ মার্চ নিশ্চিত করেন যে গ্রাজ শহরের প্রসিকিউটরদের অনুরোধে গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা ভিয়েনার একটি বাড়িতে তল্লাশি করেছে। গ্রাজ প্রসিকিউটরদের মুখপাত্র হ্যান্সজোয়ের্গ বাচের জানান, আর্তিক দুর্নীতির অভিযোগে সেলনেরের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তের অংশ হিসেবে ওই অর্থ সহায়তার ব্যাপারে জানতে পারেন প্রসিকিউটররা। সেলনের ওই সহায়তা কখন নিয়েছেন, তা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বাচের। তবে তিনি জানিয়েছেন, সেলনের ও তার আইডেন্টিটারিয়ান মুভমেন্ট অন্য যতো সহায়তা পেয়ে থাকে এ সহায়তার পরিমাণ অনেক বেশি।
বাচের আরও জানান, অস্ট্রিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় সেলনেরের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ইউটিউবে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় ক্রাইস্টচার্চ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেলনের। তিনি বলেন, ‘আমি ওই হামলার ব্যাপারে কিছুই জানি না।’ অস্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, ক্রাইস্টচার্চের সন্দেহভাজন হামলাকারী ২০১৮ সালের শেষের দিকে ইউরোপ ভ্রমণের অংশ হিসেবে অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া ও বুলগেরিয়া সফর করেছিল ব্রেন্টন ট্যারান্ট। তবে কখন ও কিভাবে তার সঙ্গে উগ্র ডানপন্থী কর্মীদের দেখা হয়েছিল সে ব্যাপারে নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তারা। ট্যারান্টের কিছু মুসলিমবিদ্বেষী দৃষ্টিভঙ্গি আইডেন্টিটারিয়ান মুভমেন্টেও প্রতিধ্বনিত হয়।