ঘরে বসেই সম্ভব অনলাইন ভ্রমণ বুকিং

154

আজিজ সাহেবের অনেকদিনের ইচ্ছা, পুরো পরিবার নিয়ে একসাথে কোথাও ঘুরতে যাবেন। কিন্তু ব্যস্ত জীবনের বাস্তবতার কাছে ছোটখাটো ইচ্ছাগুলো বারবার হার মেনে যায়। মেয়ের কলেজে পড়াশোনার চাপ, আর ছেলে থাকে ঢাকায়। দুইজনের সময় মিলানো একেবারেই অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এই মাসে যেন দৈবক্রমে ছেলে মেয়ে দুইজনকে এক ছাদের নিচে পাবেন আজিজ সাহেব। এই খবরটা নিশ্চিত করেই ট্যুর পরিকল্পনায় লেগে পড়েন তিনি।

শেষবার পুরো পরিবার নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন ২০১২ সালে। তবে সেবারের সিলেট ভ্রমণের অভিজ্ঞতাটা একেবারেই পানসে। বিভিন্ন হোটেলে বারবার ফোন দিয়ে জানতে হয় রুমের আয়তন কেমন, কি কি সুযোগ সুবিধা আছে ইত্যাদি তথ্য। এর মাঝে অনেক হোটেলে আবার ঠিকমত তথ্যও পাওয়া যায় না। সেই সময়ে স্মার্টফোনে মুহূর্তের মধ্যে ছবি পাঠানোর কোন সুযোগ ছিলনা। তাই কি আর করা, না দেখেই বুক করতে হয় হোটেল।

ঠিক শহরের মাঝে হোটেল বলা সত্ত্বেও, পৌঁছে দেখেন সেখানে যাওয়া খুবই কষ্টকর। প্রতিবার হোটেল থেকে যাতায়াতে নষ্ট হয় অনেক সময়। ঘরের অবস্থাও ছিল অপরিষ্কার। এরপর থেকে ভ্রমণ বুকিং নিয়ে একটা ভয় কাজ করে আজিজ সাহেবের মাঝে। এইবার তিনি অতিরিক্তভাবে সতর্ক থাকেন ভ্রমণ পরিকল্পনাটা নিয়ে। এতদিন পর পুরো পরিবারকে একসাথে পাচ্ছেন, কোনভাবেই যেন ভুল না হয়।

কিন্তু ভ্রমণ বুকিং কোথা থেকে শুরু করবেন, তাই ঠিক করতে পারছেন না আজিজ সাহেব। তার খুব ইচ্ছা এইবারের ভ্রমণটা দেশের বাইরে হোক। পুরো পরিবার নিয়ে একবার ইন্ডিয়া ঘুরে আসার খুব শখ তার। কিন্তু কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, সে দেশে যাওয়ার নিয়ম কানুন কি – এসব কিছু নিয়েই ধারনা নেই আজিজ সাহেবের। অনেক আগের পরিচিত এক লোককে ফোন দিলে একটি এয়ারলাইন্স এবং গুটিকতক হোটেলের সম্বন্ধে জানতে পারেন। অন্যান্য এয়ারলাইন্স সম্বন্ধে জানতে চাইলে তাকে বলা হয়, সেখানের ফ্লাইট বুক করা সম্ভব না। হোটেলগুলো নিয়েও আজিজ সাহেব ঠিক সন্তুষ্ট হতে পারলেন না। শুধুমাত্র মুখে বিবরণ শুনে মনে হল যেভাবে চিন্তা করছেন, ঠিক সেরকম মনমতো রুম হয়তো পাবেন না। ইন্টারনেটে কিছু ঘাটাঘাটি করে বেশ কয়েকটা হোটেলও পছন্দ হয় তার। কিন্তু বিদেশী ওয়েবসাইটে কিভাবে এগুলোর বুকিং দেয়, তা ঠিক বুঝে উঠতে পারলেন না তিনি। যেয়ে কি কি করা যায় এটা নিয়েও তিনি বেশ বিভ্রান্ত। লোকমুখে শোনা বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটির খোঁজখবর নিলেও, তার ইচ্ছা ছিল গতানুগতিক পর্যটকদের থেকে কিছুটা ভিন্নভাবে ঘুরার। কিন্তু তা কিভাবে করবেন?

নানা বিভ্রান্তির মাঝে ঘুরতে যাওয়ার উত্তেজনাটা যেন মাঠে মারা যাচ্ছিলো। এমন সময়ই ভ্রমণ পরিকল্পনায় যোগ দেয় আজিজ সাহেবের মেয়ে নিশাত। ইন্টারনেটের যুগে অফলাইনে কিছুই করতে রাজী নয় সে। আজিজ সাহেব আবার অনলাইনে টাকা খরচের ব্যাপারটা বেশ ভয় পান। কিন্তু নিশাত তাকে জানায়, বর্তমানে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনলাইনে নিজেদের ভ্রমণ বুকিং করছে। নিশাত তার ফোনে বাবাকে একটি অ্যাপ দেখায়, নাম তার “গোযায়ান”। ফ্লাইট, হোটেল, ট্যুর – সবকিছু একই অ্যাপ এ আছে। ভ্রমণের গন্তব্য, তারিখ আর যাত্রীর সংখ্যা ইনপুট দিয়ে সার্চ দিলেই সাথে সাথে চলে আসলো অনেকগুলো এয়ারলাইন্সের তথ্য। সাথে দাম, ফ্লাইটের সময়, যাত্রাবিরতির সময় ইত্যাদি সব লেখা। আজিজ সাহেব দারুণ জিনিষটা দেখে নিজেই গোযায়ান অ্যাপ নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলেন। হোটেল সার্চ করলেও সাথে সাথে চলে আসে বিদেশের অনেকগুলো হোটেলের দামসহ ছবি। সেখানে হোটেলের সব সুযোগ সুবিধা, শহরের কেন্দ্র থেকে দূরত্ব ইত্যাদি লেখা আছে। ট্যুরের ভিতরেও পেয়ে গেলেন একদম নতুন কিছু অ্যাক্টিভিটি, যেগুলো সম্পর্কে আগে আজিজ সাহেবের ধারনাই ছিল না।

“এগুলো তো আমি শুধু বিদেশী ওয়েবসাইটগুলোতে দেখেছি এতদিন। এই অ্যাপটা বাংলাদেশি তো?”, উদ্বিগ্ন হয়ে প্রশ্ন করেন আজিজ সাহেব। নিশাত হেসে দিয়ে বলে, “হ্যাঁ বাবা। বাংলাদেশের প্রযুক্তি দিয়েই এই অ্যাপ তৈরি।”, শুনে একটু আশ্বাস পান তিনি। বাংলাদেশি অ্যাপ হওয়ার কারণেই বিকাশ, নগদ, উপায় সহ সবধরনের দেশি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পেমেন্ট করা সম্ভব গোযায়ান এ। কিছুটা দ্বিধার সাথে পেমেন্ট নিশ্চিত করে ফ্লাইট বুক করলেন আজিজ সাহেব। এটা তার নিজের করা জীবনের প্রথম ফ্লাইট বুকিং। কিন্তু মুহূর্তের মাঝেই দেখলেন গোযায়ান থেকে ই-মেইল চলে এসেছে তার কাছে। বুকিং এর নিশ্চয়তা এবং ভ্রমণের যাবতীয় তথ্য সব দেওয়া আছে সেই ই-মেইল এ।

ছুটি শুরু হওয়ার সাথে সাথে স্ত্রী এবং ছেলে মেয়েকে নিয়ে ইন্ডিয়া ঘুরে আসলেন আজিজ সাহেব। বুকিং করার পর তার আর কিছু নিয়েই দুশ্চিন্তা করা লাগেনি। মনের খুশিতে পরিবারের সাথে সুন্দর কিছু সময় কাটাতে পেরেছেন। এখন ভ্রমণ নিয়ে তার ভয় অনেকটাই কেটে গিয়েছে। মাঝে মাঝেই তার স্ত্রীকে নিয়ে পরিকল্পনা করেন কোথাও ঘুরে আসার। ভ্রমণ নিয়ে মনোভাবের এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে গোযায়ান এর কল্যাণে। নিজের ভ্রমণের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেওয়ার আনন্দটা অতুলনীয়। আপনিও গোযায়ান ব্যবহার করে নিজের ভ্রমণ বুকিংগুলো করতে পারেন অ্যাপটি ডাউনলোড করে। ভ্রমণ চলতে থাকুক সীমাহীন।