ফটিকছড়ির ১৭ চা বাগানে নতুন কুঁড়ির হাসি

142

প্রায় দুই মাস ধরে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি হওয়ায় সজীবতা ফিরে পেয়েছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির চা-বাগানগুলো। উপজেলার ১৭ চা-বাগানে নতুন করে পাতা গজাতে শুরু করেছে। এর আগে নানা কারণে রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল এসব বাগানের চা-গাছ। কিন্তু গত কিছুদিন ধরে বৃষ্টির ফলে এই সমস্যা এখন আর নেই। বৃষ্টি হওয়ায় চা-বাগানগুলোতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। বাগানের গাছে গাছে আসছে নতুন কচি পাতা।
বাংলাদেশ চা সংসদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিবছর ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত বাগানগুলোতে পাতা তোলা বন্ধ থাকে। মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে সাধারণত বাগানগুলোতে পাতা তোলা শুরু হয়। এতদিন বৃষ্টির অভাবে তা শুরু করা যায়নি। তবে এখন বৃষ্টি হওয়ায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২১টি চা-বাগানের কারখানা চালু করা হয়েছে।
চা সংসদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৭টি চা-বাগানের মধ্যে ১৩টিতে চা প্রক্রিয়াজাতকরণের কারখানা রয়েছে। দেশের মোট চায়ের ১০ শতাংশ উৎপাদন হয় এ উপজেলা থেকে। প্রায় সব বাগানে কারখানা সার্বক্ষণিক চালু রাখার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের পাশাপাশি নিজস্ব জেনারেটরও রয়েছে।
সরেজমিন কয়েকটি চা বাগানে দেখা গেছে, গাছের পর গাছে সবুজের সমারোহে চোখ জুড়িয়ে যায়। পাতায় ভরে গেছে গাছগুলো। নতুন করে চায়ের কুঁড়ি গজানোয় খুশি চা-বাগানের শ্রমিকেরা। কয়েকটি বাগানের চা গাছ থেকে সমানে তোলা হচ্ছে পাতা। আবার কিছু বাগানের চা-গাছগুলো রেখে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো থেকে ক্রমেরই পাতা তোলা শুরু হবে।
উপজেলার কর্ণফুলী চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বছরের শুরুতে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চা পাতা উৎপাদন অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিল। তবে গত ২২ ফেব্রæয়ারি থেকে বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ায় এ বছর চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।
উদালিয়া চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, খরা এবং কুয়াশায় প্রথম দিকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু এখন মনে স্বস্তি ফিরেছে। মাটির আর্দ্রতা বাড়ায় সারও দেওয়া যাচ্ছে। ফলে বাড়তে শুরু করেছে চা গাছ। এতে ফলন বাড়বে।
কৈয়াছড়া চা-বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মামুন বলেন, চলতি বছরের ২২ ফেব্রæয়ারি প্রথম বৃষ্টিপাতে বাগানগুলোতে সজিবতা ফিরে আসে। এরপর ২৭ ফেব্রুয়ারি ও ৫-৭ মার্চ বৃষ্টিপাতে বাগানের উন্নয়নের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। পরে চলতি মাসের শুরু থেকে ক্রমে বৃষ্টির পরিমান বাড়তে থাকায় বাগানে নতুন কুঁড়ির হাসি মিলেছে। এতদিন যে বৃষ্টি ঝরেছিল তা চা বাগানের অনুকূলে থাকায় এবার উৎপাদনও বৃদ্ধি পেতে পারে।
চা সংসদের সভাপতি মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে চা উৎপানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।