ভোক্তা যাতে অনুমোদনপ্রাপ্ত পণ্যের প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে পারে সে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। অবৈধ পণ্যের বাজার বন্ধ করতে বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বৈধ প্রতিষ্ঠানের এলাকাভিত্তিক নাম-ঠিকানা প্রকাশ করা হবে। এতে ভোক্তা সচেতনতা যেমন বাড়বে তেমনি অবৈধ পণ্য ভোক্তারা পরিহার করবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
অত্যাবশ্যকীয়ভাবে ১৮২টি পণ্যের মান দেখা ও এর সনদ দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই)। প্রতিষ্ঠানটি এসব পণ্যের নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মান সনদ দিয়ে থাকে। কিন্তু এর মধ্যেও অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান কোনো ধরনের লাইসেন্স না নিয়েই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। অনুমোদন না থাকা এসব পণ্যের খোঁজে বিএসটিআই অভিযান পরিচালনা করলেও এ ক্ষেত্রে শতভাগ সফল হয় না সংস্থাটি। তাই অবৈধ এসব পণ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এজন্য লাইসেন্স থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করা হবে। এতে গ্রাহক বা ভোক্তারাই এলাকাভিত্তিক বৈধ প্রতিষ্ঠানের নাম জানতে পারবে। ফলে ভোক্তারা নিজেরাই অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে পারবে। পণ্যের মান সম্পর্কেও সচেতনতা সৃষ্টি হবে।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম এর উপ-পরিচালক মো. নুরুল আমিন বলেন, অবৈধ পণ্যগুলো কোনো অবস্থাতেই বন্ধ করা যাচ্ছে না। আমরা এবার ভোক্তাদের সচেতন করার ব্যাপারে জোর দিচ্ছি। থানাভিত্তিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হবে। এতে ভোক্তারা বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন। স্বাভাবিকভাবেই ভোক্তারা অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য পরিহার করবেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা কয়েকটি থানার ভোগ্যপণ্যের বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করবো। ক্রমান্বয়ে সবগুলো থানার ও সব ধরনের পণ্যের বৈধ প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করা হবে। কিছুদিন পর পর এমন সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে।
প্রাথমিকভাবে নগরীর ৫টি থানা এলাকায় অবস্থিত খাদ্যপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মান সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করছে বিএসটিআই। খাদ্যপণ্যের মধ্যে পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, চানাচুর, সেমাই ও লাচ্ছা সেমাই পণ্যের বৈধ লাইসেন্স থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। এ ৫টি থানার মধ্যে রয়েছে খুলশী, কোতোয়ালী, পাঁচলাইশ, চকবাজার ও সদরঘাট। এরমধ্যে খুলশী থানা এলাকায় ৮টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে। কোতোয়ালী থানা এলাকায় ১৫টি প্রতিষ্ঠানের, পাঁচলাইশ এলাকায় ১২টি প্রতিষ্ঠানের, চকবাজার এলাকায় ৯টি প্রতিষ্ঠানের এবং সদরঘাট থানা এলাকায় ৮টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে।
বিএসটিআই চট্টগ্রাম আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক (মেট) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ভেজাল ও অবৈধ পণ্যের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান নিয়মিত অব্যাহত আছে।
কিন্তু এর ফাঁকে অসাধু ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি করে যাচ্ছে। অবৈধ প্রতিষ্ঠান ও পণ্যগুলো চিহ্নিত করা আমাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। পণ্যের ভোক্তাদের সচেতনতা বাড়াতে আমরা বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম পত্রিকায় প্রকাশ করার উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা বৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করবো। থানাভিত্তিক নামগুলো প্রকাশ করা হবে। এতে ভোক্তারা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সতর্ক হবে। তারা নিজেরাই অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য পরিহার করবে।