৯ বছর পর জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ খোয়ালো বাংলাদেশ

9

পূর্বদেশ ক্রীড়া ডেস্ক

এমন দিন সবশেষ এসেছে কবে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে! উত্তাল গ্যালারিতে ঠাসা দর্শকের বাঁধভাঙা উল্লাস। নেচে-গেয়ে, হুল্লোড়ে তারা মাতিয়ে রাখলেন সারাক্ষণ। মাঠের ক্রিকেটেও সেই আবহের সুর। ক্রমশ তলানিতে নামতে থাকা জিম্বাবুয়ের কাছে এ যেন ক্রিকেটের নব জাগরণ। যার নেতৃত্বে একজন পাকিস্তানি রাজা! তার রাজকীয় ব্যাট ঠিক যেন শানানো তরবারি। যার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশ দল। স্বপ্নের মতো ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজা আরেকটি দুর্দান্ত সেঞ্চুরি দলকে জিতিয়ে প্রমাণ করলেন, আগের ম্যাচের জয়টি অঘটন ছিল না!
ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থার ক্রমউন্নতি আর জিম্বাবুয়ের ক্রমানবতি- একটা সময় মনে হচ্ছিল জিম্বাবুয়ে বুঝি আর কখনোই হারাতে পারবে না বাংলাদেশকে। এ বিশ্বাসটা দৃঢ় হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তাদের মনেই।সে কারণেই জাতীয় দলের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বেছে নেয়া হলো জিম্বাবুয়ে সফরকে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা খুবই প্রয়োজন। কিন্তু একেবারে প্রস্তুতিহীন একটি দল কিংবা যে দেশে খেলতে গেলো, তাদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার প্রবণতাটা কোনোভাবেই মাথা থেকে যায়নি।
কিন্তু খেলাটা ক্রিকেট। যে কোনো সময় চরিত্র বদলে যেতে পারে। যে কারণে ক্রিকেটকে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। বাংলাদেশ ক্রিকেট কর্মকর্তাদের মাথায় হয়তো এটা ছিল না।

যে কারণে দেখা গেছে টি-টোয়েন্টি থেকেই একাদশ তৈরি করা নিয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সে কারণেই শুরুতে পরাজয়। সেই আত্মবিশ্বাসে ছিড় ধরলো, সেটা আর ফিরলো না। অন্যদিকে অন্যরকম আত্মবিশ্বাসে উজ্জীবিত হয়ে উঠলো জিম্বাবুয়ে।
সে ধারাবাহিকতায় টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজ হারের রেশ কাটতে না কাটতেই ৯ বছর পর প্রথম ওয়ানডে সিরিজ পরাজয়ের স্বাদ নিলো বাংলাদেশ দল। প্রথম ওয়ানডেতে ৩০৩ রান করেও ৫ উইকেটে হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। অপরাজিত ১৩৫ রান করে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেন সিকান্দার রাজা।
দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখালেন রাজা। ৩ উইকেট নেয়ার পর ১১৭ রানে অপরাজিত থাকলেন। তার কাছেই সিরিজ হারতে হলো বাংলাদেশকে। সে সঙ্গে ৭৫ বলে ১০২ রান করে বাংলাদেশকে হারানোর পথে অনেক বড় অবদান রাখেন অধিনায়ক রেগিস চাকাভা।
২০১৩ সালে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের কাছে ওয়ানডে সিরিজি হেরেছিল টাইগাররা। সেবারও ঘরের মাঠে সিরিজ জেতে জিম্বাবুয়ে। এরপর ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে ৫-০ ব্যবধানে পরাজিত করে বাংলাদেশ। মাশরাফির শেষের নেতৃত্বও শুরু হয়েছিল এই সিরিজের মধ্য দিয়ে।
পরের বছর আবারও বাংলাদেশ সফরে আসে জিম্বাবুয়ে। এবার ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ জেতে ৩-০ ব্যবধানে। তিন বছর বিরতি দিয়ে আবারও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ। স্বাগতিক বাংলাদেশ। এবারও তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ সফরকারীরা।
২০২০ সালে জিম্বাবুয়ে এসেছিল বাংলাদেশে। সেবার খেলে ৩ ম্যাচের সিরিজ। এই সিরিজেও বাংলাদেশের জয় ৩-০ ব্যবধানে। এই সিরিজটা ছিল মাশরাফির নেতৃত্বের শেষ। ২০২১ সালে বাংলাদেশ সফর করে জিম্বাবুয়েতে। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে। বাংলাদেশ জিতলো ৩-০ ব্যবধানে। টানা ৫ সিরিজ জয় এবং ৯ বছর পর আবারও সিরিজ হারলো বাংলাদেশ।