৮ উপজেলায় দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত

234

আবেদ আমিরী, পটিয়া

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আট উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্তের কাজ শুরু করেছে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল শনিবার পটিয়ায় বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে এর কাজ শুরু হয়।
জানা যায়, কেন্দ্রের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতিটি উপজেলায় বর্ধিত সভার মাধ্যমে তৃণমূল থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নাম সংগ্রহ করা হবে। এরপর সেখান থেকে যাচাই বাছাই করে জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম পাঠাবে। তবে গত ইউপি নির্বাচনে বহিস্কৃত ৪৯ বিদ্রোহী ও দলে অনুপ্রবেশকারীরা জেলা কমিটির তালিকায় স্থান পাবে না। জেলা থেকে প্রস্তাবিতদের মধ্য থেকে কেন্দ্র নির্ধারণ করে দেবে কে দলীয় প্রার্থী। গতকাল শনিবার পটিয়ায় বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর বাকি সাত উপজেলায় ৭দিন চলবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ধিত সভা।
জানা গেছে, গত ইউপি নির্বাচনে দক্ষিণ জেলার আট উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন ৪৯ জন। এরা হলেন কর্ণফুলী উপজেলায় ৫ জন, পটিয়ায় ৩ জন, আনোয়ারায় ১০ জন, চন্দনাইশে ৩ জন, বোয়ালখালীতে ২ জন, সাতকানিয়ায় ১২ জন, বাঁশখালীতে ১২ জন ও লোহাগড়ায় ২ জন। ওই সময় জেলা আওামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের বহিস্কার করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিতও হন। তবে বহিস্কৃতদের অনেকে পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্টিত হন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ বলেন, ‘গতবার যারা বিদ্রোহী হয়েছিলেন তাদের নাম এবার কেন্দ্রে কোনভাবেই প্রেরণ করা যাবে না। তিনি বলেন, কেউ যদি এদের তথ্য গোপন করে নাম কেন্দ্রে পাঠায় তা হবে সংগঠনবিরোধী কাজ। বিষয়টি কোন না কোনভাবে কেন্দ্রের কাছে পৌঁছাবে এবং যারা বিদ্রোহীদের নাম পাঠাবে তাদের ক্ষতি হবে।’ বহিস্কৃতদের দলে শক্ত অবস্থান ও পদোন্নতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কোন কোন ক্ষেত্রে স্থানীয় এমপি বা নেতা তাদের দাওয়াত নেন। নানা কারণে তাদের পদোন্নতি দেন। কিন্তু এদের কারণে দলের চরম ক্ষতি হয়। বিদ্রোহীদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করলে দেখা যায় তারা অসামাজিক কাজে জড়িত থাকে, নানা অপরাধের নিয়ন্ত্রণ করে। তাই তারা দলের কথা না ভেবে নিজের প্রয়োজনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয় এবং জনপ্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা করে। আমি এদের ঘৃণা করি। কেন্দ্রে কোনভাবেই এদের কারো নাম গেলে আমি শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব বিষয়টি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দিতে।’
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রত্যেক উপজেলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে সভা আহব্বান করা হয়েছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মুল্যায়িত হবে। গতবারের নির্বাচনের সময় বিদ্রোহ করা প্রার্থীদের বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুসরণ করা হবে। পটিয়া উপজেলায় আজ (শনিবার) তৃণমূলের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে দক্ষিণ জেলার ৮ উপজেলায় ধারাবাহিত সভা।’
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান জানান, ‘কেন্দ্রে কখন এসব নাম পাঠাতে হবে সে সিডিউল না দিলেও আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছি। যাতে তফশিল ঘোষণার পরপরই এসব নাম কেন্দ্রে পাঠাতে পারি। উপজেলা পর্যায়ে বর্ধিত সভায় গত নির্বাচনে বহিস্কৃত এবং অনুপ্রবেশকারীদের নাম প্রস্তাব আকারে দেয়া হলেও জেলা থেকে তাদের নাম বাদ দেয়া হবে। অনুপ্রবেশকারী ও বহিস্কৃতদের নাম বাদ দিয়ে কেন্দ্রে নাম প্রেরণ করা হবে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের। দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে যাকে মনোনয়ন দেন তিনিই হবেন দলের প্রার্থী।’