পূর্বদেশ ডেস্ক
কোভিড মহামারি পরবর্তী পড়াশোনার চাপ, হতাশা ও সেশনজট কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষা কার্যক্রমের চাপে অবসাদে ভুগছেন প্রয় ৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী, যে সমস্যা থেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিচ্ছেন তাদের অনেকে। এমন দাবি করল আঁচল ফাউন্ডেশন।
এক সীমাক্ষা চালিয়ে এমন ফল পাওয়া গেছে বলে সংগঠনটি জানিয়েছে। দেশের বিভিন্ন পাবলিক, বেসরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসায় লেখাপড়া করা ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে তারা দেখতে পেয়েছে, ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর পড়াশোনা সংক্রান্ত সমস্যা থেকে বাঁচতে আত্মহত্যার পরিকল্পনা করছিলেন।
বাংলাদেশে ২০২০ সালের মার্চ থেকে শুরু হওয়া কোভিড মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সেশনজট ও পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হতাশাকে শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন এ সংশ্লিষ্ট গবেষকরা।
এছাড়া, প্রাতিষ্ঠানিক চাপেও পড়াশোনায় অনীহা তৈরি, অভিভাবকদের চাপ, কোভিডে মনস্তাত্বিক পরিবর্তনকে শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজ।
গতকাল শনিবার ‘করোনা পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং তাদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শিরোনামে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই সমীক্ষার প্রতিবেদন তুলে ধরে আঁচল। গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন ফাউন্ডেশনের গবেষক ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল ওহাব।
জরিপে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার মোট ১ হাজার ৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের ৭৫ শতাংশের বেশি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা মাথায় এসেছে ৩৪.১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর, আত্মহত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন ২.৪৪ শতাংশ এবং আত্মহত্যার উপকরণ যোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন ৪.৭৬ শতাংশ
বেড়েছে ভয় ও আশঙ্কা
জরিপে মানসিক সুস্থতা বিষয়ক বেশ কয়েকটি নিয়ামক নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে উত্তরে আসে ‘উদ্বেগজনক’ কিছু তথ্য। মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৭.৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন কোভিড মহামারি পরবর্তী সময়ে তাদের নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগে তারা জর্জরিত।
ডিজিটাল আসক্তিতে মানসিক সমস্যা
দৈনন্দিন জীবন-যাপনের অংশ হয়ে যাওয়া ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর মধ্যে মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেস্কটপের উপরে অতিরিক্ত আসক্তি ও নির্ভরতা শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন ৭০.৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
আবার মানসিকসমস্যা জনিত কারণে নিত্যদিনের ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে।
