৬ বড় জাহাজ ক্রয় প্রকল্প বিএসসি’র

9

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের নীট মুনাফা হয়েছে ৭২ কোটি টাকা। যা গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের তুলনায় নীট আয় বেড়েছে ৩০ দশমিক ৫৫ কোটি টাকা। এবার শেয়ার হোল্ডারদেরকে নীট লাভ হতে ১২ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেছে পরিচালনা পর্ষদ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিএসসির সম্মেলন কক্ষে ৪৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর সুমন মাহমুদ সাব্বির এসব কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ২০২০-২১ অর্থ বছরের এজিএম আগামী ২৭ জানুয়ারি অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, বর্তমানে মাত্র ৮টি জাহাজের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে বিএসসি। দেশের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি তেল ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহনের মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তা ও খাদ্য নিরাপত্তায় সরাসরি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। বিএসসির ২০২০-২১ অর্থ বছরের সামগ্রিক কর্মকান্ডের একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বিএসসির পরিচালনা আয় ছিল ২৭৪.২৭ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আয় হয়েছে প্রায় ৪৮.৭০ কোটি টাকা। সর্বমোট আয় হয়েছে প্রায় ৩২২.৯৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে পরিচালনা ব্যয় ছিল ১৬০.২২ কোটি টাকা এবং প্রশাসনিক ও আর্থিক খাতে ব্যয় ছিল ৬৭.০৫ কোটি অর্থাৎ সর্বমোট ব্যয় হয় ২২৭.২৭ কোটি টাকা। আলোচ্য অর্থ বছরে কর সমন্বয়ের পর সংস্থার নীট মুনাফা হয়েছে ৭২.০২ কোটি টাকা। এছাড়া গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিএসসির মোট আয় হয়েছিল ৩২২.৮৪ কোটি টাকা ও ব্যয় হয়েছিল ২৪৫.৩৬ কোটি টাকা অর্থাৎ কর সমন্বয়ের পর নীট মুনাফা হয়েছিল ৪১.৪৭ কোটি টাকা। গত বছর থেকে এ বছর আমাদের নীট আয় বেড়েছে ৩০.৫৫ কোটি টাকা।
বিএসসির মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় এ প্রতিষ্ঠানের দেশের বর্তমান চাহিদা বিবেচনায় ন্যূনতম ৪০-৫০টি জাহাজ থাকা উচিত উল্লেখ করে কমডোর বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূল কারণে বিশেষ করে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করতে না পারায় সে পরিমাণ জাহাজ কর্পোরেশনের বহরে সংযোজন করা সম্ভব হয়নি। তবে বর্তমান সরকারের সুযোগ্য দিক নির্দেশনা ও সক্রিয় সহযোগিতায় এ সংস্থা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকারের উন্নয়ন সহযোগী এবং বøু-ইকোনমি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রূপকল্প-২০৪১ এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিশ্বমানের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ আন্তর্জাতিক শিপিং সংস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে মিশ্র বাণিজ্যিক জাহাজ বহর সৃষ্টিসহ নানাবিধ উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, রামপাল, পায়রা ও মাতারবাড়ীতে তিনটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা বিদেশ হতে আমদানি করা হবে। দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার স¦ার্থে কয়লা পরিবহনের জন্য ৮০ হাজার টনের দুটি মাদার বাল্ক ক্যারিয়ার ক্রয় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আর ইস্টার্ন রিফাইনারির সমস্ত ক্রুড অয়েল বিএসসির নিজস্ব জাহাজের মাধ্যমে পরিবহনের জন্য আরও এক লাখ থেকে এক লাখ ২৫ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি মাদার ট্যাংকার ক্রয় সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া আমদানিকৃত ডিজেল ও জেট ফুয়েল পরিবহনের জন্য দুটি ৮০ হাজার টন ক্ষমতা সম্পন্ন মাদার প্রোডাক্ট অয়েল ট্যাংকার সংগ্রহের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
তাছাড়া রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে দেশের সকল সরকারি সংস্থার আমদানিকৃত পণ্য বিএসসির মাধ্যমে পরিবহন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। এতে দেশের মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়সহ ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব। এসময় বিএসসির বিভিন্ন সেক্টরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।