টেকনাফ প্রতিনিধি
টেকনাফে পাহাড়ের ক্ষেত থেকে অপহরণের তিনদিন পর চার কৃষকের মধ্যে তিনজন বাড়ি ফিরে এসেছেন। সাড়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়ে সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কবল থেকে তারা ছাড়া পেয়েছেন। আরেক অপহৃত আব্দুস সালামের পরিবারের কাছ থেকে দাবি করা মুক্তিপণ না পাওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়নি। গত মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।
গত ৭ জানুয়ারি ভোররাতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকায় ক্ষেত পাহারারত অবস্থায় চার কৃষককে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এরপর মুক্তিপণ হিসেবে জনপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ দাবি করে আসছিল। অবশেষে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে হ্নীলা পাহাড়ি এলাকা থেকে মুক্তিপণ দিয়ে অপহৃত ৩ জন ছাড়া পান। তবে এখনও আব্দুস সালাম নামে একজন অপহরণকারীদের কাছে জিম্মি রয়েছেন।
ফিরে আসা কৃষকরা হলেন, টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেচুয়াপ্রাং এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে আব্দুর রহমান, রাজা মিয়ার ছেলে মুহিব উল্লাহ এবং ফজলুল করিমের ছেলে আব্দুল হাকিম।
তবে অপহৃত একই এলাকার আবুল হোসনের ছেলে আব্দুস সালামকে সন্ত্রাসীরা ফেরত দেয়নি। সন্ত্রাসীরা তার পরিবারের কাছ থেকে এখনও মুক্তিপণ দাবি করছে। কারণ হিসেবে ফিরে আসারা জানান, আব্দুস সালামের পরিবারের লোকজন পুলিশ ও গণমাধ্যমে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি ভিডিও বক্তব্য দিয়েছেন। সালামকে ফেরত দিতে মোটা অংকের মুক্তিপণ চেয়েছে অপহরণকারীরা।
ফিরে আসা তিন কৃষকের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী জানান, আব্দুস সালামের পরিবার ধনী হওয়ায় তার কাছ থেকে আরও বেশি টাকা দাবির কথা বলা হচ্ছে। এ ঘটনায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে স্থানীয় অপরাধীরাও জড়িত। এ কারণে অপহৃত কার কত টাকার সম্পদ রয়েছে সব জানা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের।
চেয়ারম্যান রাশেদ বলেন, মুক্তিপণ দিয়ে যারা ফিরে এসেছেন তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারধর এবং আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে ভয়ে কেউ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তথ্য দিচ্ছেন না।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মাহফুজুল ইসলাম বলেন, টেকনাফে অপহৃত তিন জন ফিরে আসার খবর স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি। তবে মুক্তিপণের বিষয়টি নিয়ে শুরু থেকে অপহৃতদের পরিবার পুলিশকে অবহিত করেনি। এমনকি কোনও অভিযোগও তারা দেননি। তারপরও পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং অপর জনকে উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে।