৫ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাব

22

পূর্বদেশ ডেস্ক

পাঁচ অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন। এই পাঁচ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর উপলক্ষে গতকাল রবিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের উন্নয়ন কাজ স্থবির হয়ে পড়লেও বেজা চেষ্টা করেছে তার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার। এরই ধারাবাহিকতায় বেজা আগামি ২৬ অক্টোবর ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থান-২০২২’ অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার আন্তরিক সহযোগিতায় বেজা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে উৎসাহ দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত সরকারি কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। যার মধ্যে ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ চলমান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে এ পর্যন্ত ২২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এছাড়া ১২টি লাইসেন্স পাওয়া বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতোমধ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক শিল্পোৎপাদন শুরু করেছে এবং আরও ৬১টি শিল্প নির্মাণাধীন। এই অঞ্চলগুলোতে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়েসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে’- বলেন বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান।
তিনি জানান, বর্তমানে বেজা ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার থেকে বিনিয়োগকারীদের ১২৫টি পরিষেবা দিচ্ছে, যার মধ্যে ৪৮টি পরিষেবা অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে প্রথমবারের মতো উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ৪টি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম, যার মধ্যে রয়েছে ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টিকে গ্রæপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলেও প্রথবারের মতো উদ্বোধন হতে যাচ্ছে একটি কারখানা। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে আরও ৯টি শিল্প ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ পিভিসি কারখানা।
বেজার পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে তুলে ধরা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক এই পাঁচ শিল্প অঞ্চলে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ১৭৭ এবং বরাদ্দ দেওয়া জমির পরিমাণ ৬০৮৪ দশমিক ৭৯৯ একর। এই পাঁচ শিল্প অঞ্চলে বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে ২ হাজার ২১৭ কোটি ৩১ লাখ ৭৭ হাজার মার্কিন ডলার। আর প্রস্তাবিত কর্মসংস্থান ৮ লাখ ১৬ হাজার ৫৪১ জনের।
এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে ১৩৬ বিনিয়োগকারীর কাছে থেকে ১ হাজার ৭৮৩ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৬ বিনিয়োগকারীর কাছে থেকে ১৩০ কোটি ৬১ লাখ ৭৯ হাজার ডলার, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৫ বিনিয়োগকারীর কাছে থেকে ১৭ কোটি ৪৯ লাখ ৩০ হাজার ডলার, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৩ বিনিয়োগকারীর কাছে থেকে ২৫৮ কোটি ১৩ লাখ ৮০ হাজার ডলার এবং সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে ১৭ বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে ২৭ কোটি ১১ লাখ ৮ হাজার ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিতি ছিলেন বেজার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও অর্থ) ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ হাসান আরিফ, বঙ্গবন্ধু শেক মুজিব শিল্প নগরের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক প্রমুখ।