৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বিটিভি চট্টগ্রামের জন্য

14

পূর্বদেশ অনলাইন
বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর চব্বিশ ঘণ্টার সম্প্রচারের মধ্যে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জন্য বড়সড় আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একটি বহুতল ভবনে মাল্টিপারপাস স্টুডিওসহ স্বতন্ত্র কয়েকটি স্টুডিও নির্মাণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গ্রহণ করা হয়েছে। সবকিছু মিলে ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রকে সর্বাধুনিক সুবিধায় সমৃদ্ধ করার একটি প্রকল্প গতকাল মঙ্গলবার একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। অচিরেই প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। প্রথম সাউন্ড স্টুডিও স্থাপন করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম অঞ্চলের মাটি ও মানুষের কথা তুলে ধরার পাশাপাশি শিক্ষা এবং সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে শুরু হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের যাত্রা। মাত্র দেড় ঘণ্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মাধ্যমে যাত্রা করা কেন্দ্রটি ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টার সম্প্রচার শুরু করেছে। গত ১৯ ডিসেম্বর রজতজয়ন্তী উপলক্ষে এই টিভি কেন্দ্রের ২৪ ঘণ্টার সম্প্রচার শুরু হয়। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান বহির্বিশ্বেও সম্প্রচার শুরু হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রায় ত্রিশ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৩৮ ফুট বা ১৩৩ দশমিক ৫ মিটার উঁচু চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রের টাওয়ার নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়। এই টাওয়ার দিয়ে ১২টি ক্যাবল চ্যানেল ও দুটি টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল চালানো যায়। টাওয়ারের পাশেই স্থাপন করা হয়েছে ট্রান্সমিশন। এই ট্রান্সমিশন দিয়ে বিটিভি, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, সংসদ টিভি ও চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্র সম্প্রচার করা হচ্ছে। এর ফলে চট্টগ্রামের মত সারাদেশেও বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান টেরিস্ট্রিয়াল হিসেবে দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের একটি আলাদা কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সারাদেশের পাশাপাশি পুরো বিশ্ব থেকে সম্প্রচারিত হচ্ছে।

২৪ ঘণ্টার সম্প্রচার শুরু হলেও বেশ কিছু সংকট রয়েছে এই কেন্দ্রের। এসব সংকট ঘুচানোর জন্য সরকার ৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রের বর্তমান ভবনের পেছনে খালি জায়গায় দশ তলার ফাউন্ডেশনে চার তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। ওই ভবনটিতে একটি মাল্টিপারপাস স্টুডিও ছাড়াও কয়েকটি স্বতন্ত্র স্টুডিও নির্মাণ করা হবে। প্রতিষ্ঠা করা হবে একটি সাউন্ড স্টুডিও। কয়েকটি এডিটিং স্যুট, এডিটিং প্যানেলসহ টেলিভিশন কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হবে। এতে একই সাথে আড়াইশ থেকে তিনশ লোক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি স্টুডিও তৈরি করা হবে। যাতে মঞ্চ এবং গ্যালারি নির্মাণ করা হবে। দর্শকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান ধারণ এবং সরাসারি সম্প্রচারের (লাইভ) সুবিধা থাকবে। অত্যাধুনিক একটি টেলিভিশন কেন্দ্র হিসেবে চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদনের ব্যবস্থা করেছেন বলেও সূত্র জানিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচারে গেলেও কিছু সমস্যা থেকে গিয়েছিল। ওসব সমস্যার সমাধান এবং এই কেন্দ্রে সর্বাধুনিক সব সুবিধা নিশ্চিত করতে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আজ প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে যাতে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হয় তা দেখা হচ্ছে বলেও ড. হাছান মাহমুদ উল্লেখ করেন।

জানতে চাইলে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য বলেন, প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকগুলো জরুরি এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ হবে প্রকল্পটির আওতায়। প্রকল্পটি একনেকের অনুমোদন পেয়েছে। এটি শুধু চট্টগ্রাম টেলিভিশন কেন্দ্রের জন্য নয়, চট্টগ্রামের মানুষের জন্যও অনেক বড় সুখবর।