৪ মাসের শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছিল তার চাচা

18

চকরিয়া প্রতিনিধি

চকরিয়ায় পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে ৪ মাস বয়সী এক শিশুকে অপহরণ করেছে আপন চাচা। পরে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধারসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে। গত ২৯ মার্চ রাতে উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের ডেইঙ্গাকাটা এলাকায় এ অপহরণের ঘটনা ঘটে। পরদিন ৩০ মার্চ চকরিয়া থেকে শিশুটিকে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে যাওয়ার সময় কর্ণফুলী থানা পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ডেইঙ্গাকাটা এলাকার আলী হোসেনের ছেলে ও অপহৃত শিশুর বড় চাচা মো. আল আমিন (২৬), চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মোহাম্মদ আরিফ (২৪) ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ হাতিয়ার মাগুরাবাজার এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে নুরুন্নবী (২৫)।
জানা যায়, শিশুটিকে নিয়ে তিন অপহরণকারী গত ৩০ মার্চ দুপুরে চকরিয়া থেকে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে চট্টগ্রাম আসছিলেন। এ সময় শিশুটি প্রচুর কান্নাকাটি করায় বাসের সুপারভাইজারসহ যাত্রীদের সন্দেহ হয়। তখন তারা তাদের প্রশ্ন করলে এলোমেলো উত্তর দেয়ায় পার্শ্ববর্তী কর্ণফুলী থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিশুটিকে অপহরণের কথা স্বীকার করে। পরে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম সেখানে গিয়ে অপহৃত শিশুটিসহ অপহরণে জড়িত ৩ জনকে নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় অপহৃত শিশুর মা জোসনা আক্তার বাদি হয়ে গত বুধবার রাতে তিন জনকে আসামি করে চকরিয়া থানায় এজাহার দায়ের করেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চকরিয়া থানা পুলিশ এজাহারটি মামলা হিসেবে রুজু করে। গতকাল বিকালে অপহরণচক্রের তিন সদস্যকে আদালতের কাছে সোপর্দ করে পুলিশ। মামলার আসামিরা হলেন বরইতলী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ডেইঙ্গাকাটা এলাকার আলী হোসেনের ছেলে ও অপহৃত শিশুর বড় চাচা মো. আল আমিন, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ষোলশহর এলাকার মো. ফারুকের ছেলে মোহাম্মদ আরিফ ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার দক্ষিণ হাতিয়ার মাগুরাবাজার এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে নুরুন্নবী।
মামলা বাদি জোসনা আক্তার বলেন, ‘গত ২৯ তারিখ রাতের খাবার খেয়ে দরজা বন্ধ করে আমি ও আমার শাশুড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। এ সময় আমার চার মাস বয়সী শিশুসন্তান নুরুল কাদেরও ঘুমিয়ে পড়ে। ওইরাতের কোন একসময় আমার ভাসুর আল আমিনের নেতৃত্বে অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা কৌশলে বাড়ির দরজা খুলে আমার শিশুসন্তানকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে ভোর রাতের দিকে আমার ঘুম ভেঙে দেখি পাশে আমার সন্তান নেই। পরে বাড়ির চারপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু কোথাও সন্তানের সন্ধান না পেয়ে প্রতিবেশীদের কাছে ঘটনাটি জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরদিন দুপুরের দিকে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পাই আমার শিশু সন্তানকে উদ্ধার করেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা পুলিশ। তাৎক্ষণাৎ বিষয়টি চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করি। পরে চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম কর্ণফুলী থানায় গিয়ে শিশু নুরুল কাদের ও অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে থানায় নিয়ে আসে।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পারিবারিক শত্রুতার জেরে শিশুর আপন বড় চাচা ৪ মাস বয়সী শিশু নুরুল কাদেরকে অপহরণ করে। পরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানা পুলিশ বাসের সুপারভাইজার ও যাত্রীদের সহায়তায় ওই শিশুকে উদ্ধার করে। এ সময় অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহৃত শিশুর মা জোসনা আক্তার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার বিকালে অপহরণকারী চক্রের তিন সদস্যকে আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।’