৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সবাই আওয়ামী লীগের

7

রাঙামাটি প্রতিনিধি

রাঙামাটি সদর উপজেলায় নির্বাচন আগামী ৮ মে। উপজেলা পরিষদের এই নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে রাঙামাটি সদর উপজেলায় প্রার্থীরা মাঠ গরম করতে শুরু করেছেন। বিরোধীদলবিহীন এই নির্বাচনে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে যারা নির্বাচন করছেন তাদের ৪ জনই আওয়ামী লীগের। বাকী ২ জনও আওয়ামী ঘরানার বলে জানা গেছে।
নির্বাচনে মুখোমুখী হতে যাওয়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থাকা ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি শহিদুজ্জামান মহসিন রোমান, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান, জেলা যুবলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিপ্লব চাকমা ও যুবলীগ নেতা পঞ্চানন ভট্টাচার্য। যাচাই-বাছাইয়ে মো. শাহজাহানের প্রার্থিতা বাতিল হলেও গতকাল রবিবার আপিল শুনানিতে বৈধতা পেয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের এ চার প্রার্থীই প্রস্তুত নির্বাচনে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য। আদতে দলীয় প্রার্থীতা না থাকলেও একে অপরকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবেই জানান দিচ্ছেন তারা। ফলে বিভক্ত হয়ে পড়ছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরও ২ জন। তারা হলেন অন্ন সাধন চাকমা ও সুফিয়া কামাল ঝিমি। তারা নিজেদের স্বতন্ত্র দাবি করলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তারাও আওয়ামী ঘরানার প্রার্থী।
এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা দুর্গেশ^র চাকমা, মনিরুল ইসলাম মনির, রিদওয়ানুল হক সেলিম, চন্দ্রজিৎ চাকমা, দয়াময় চাকমা ও পলাশ কুসুম চাকমা। এছাড়াও একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন ইসলাম, মনিকা আক্তার ও রিতা চাকমা।
মো. শহিদুজ্জামান রোমান বলেন, গত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে আমি বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলাম। এবারও আমি জয়ী হবো। দলীয় নেতাকর্মীসহ আমার বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। এলাকার উন্নয়ন ও জনসেবামূলক আমার অনেক কাজ অসম্পন্ন রয়ে গেছে। অসম্পন্ন কাজ সমাপ্ত করতে এবারও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এবার নির্বাচিত হলে আমার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করতে চাই।
অপর প্রার্থী অ্যাড. বিপ্লব চাকমা বলেন, দল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে এবার নির্বাচনে দলীয় একক প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ নেই। দলের যারা নির্বাচন করবেন তারা সবাই স্বতন্ত্র হিসাবে করবেন। নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যই আমি প্রার্থী হয়েছি। আমার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে, তাই নির্বাচন করছি।
মো. শাহজাহান বলেন, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যেই আমার প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছি। আপিলে আমার প্রার্থিতা বৈধ বিবেচিত হয়েছে। নির্বাচনে আছি, থাকব।
এছাড়া আরেক প্রার্থী একই দলের পঞ্চানন ভট্টাচার্যও নির্বাচনে থাকবেন বলে জানা গেছে।
স্বতন্ত্র হলেও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের সমর্থিত একক প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কাউখালীতে বর্তমান চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা চৌধুরী, বরকলে সাবেক চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমা ও জুরাছড়িতে জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা। এছাড়াও রয়েছেন কাউখালীতে মংসুইউ চৌধুরী, বরকলে বর্তমান চেয়ারম্যান বিধান চাকমা এবং জুরাছড়িতে বর্তমান চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা ও কেতন চাকমা।
এ চার উপজেলার মধ্যে রাঙামাটি সদর উপজেলায় ১ লাখ ১ হাজার ১৯৮, কাউখালীতে ৫০ হাজার ৮০৩, বরকলে ৩৯ হাজার ১৮৩ এবং জুরাছড়িতে ২০ হাজার ৩০ জন ভোটার রয়েছেন।
এদিকে রাঙামাটি সদরে উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে দ্বন্দ্বে ও বিরোধে জড়ানোর আশঙ্কাও করা হচ্ছে। আগামি ৮ মে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোট অনুষ্ঠিত হবে রাঙামাটি সদর, কাউখালী, বরকল ও জুরাছড়ি উপজেলায়। এসব উপজেলায় প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন চেয়ারম্যান পদে ১৩, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ১৪ এবং ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ১০ প্রার্থী।