৩৮টি ‘ওভারব্রিজ’ নির্মাণ করবে সিটি কর্পোরেশন

124

ব্যস্ত নগরীর ব্যস্ত মোড়গুলো হয়ে উঠেছে মৃত্যুফাঁদ। বেপরোয়া যান চলাচল ও মানুষের অসচেতনায় ঘঠছে নিয়মিত দুর্ঘটনা। ভোগান্তি ও দুর্ঘটনা থেকে মুক্তি পেতে মোড়গুলোতে ওভারব্রিজ নির্মাণই সমাধান বলে মনে করেন নগর পরিকল্পনাবিদরা। তাই নগরীর ৩৮টি মোড়ে ওভারব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এছাড়া ৬শ মিটার ওভারপাস রাস্তা করা হবে। নগরীর এয়ারপোর্ট রোডকে ৪ লেনে উন্নীতকরাসহ অন্যান্য রোড সম্প্রসারণ করা হবে। একইসাথে নগরীর পরিবেশ উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আরও ৭টি আধুনিক কসাইখানা নির্মাণের। ইতোমধ্যে গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রকল্পটির ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প ছক প্রস্তাবনা) স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কসমূহ উন্নয়ন ও ¯øটার হাউজ নির্মাণসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপি সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে ব্যয় হতে পারে ৩ হাজার ১৬৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। প্রকল্পের অধীনে ৬৮৯ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার রাস্তার সম্প্রসারণ করা হবে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৯৬ কোটি ৮৩ লাখ ৮২ হাজার টাকা। একই সাথে ৩৮টি ওভারব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যার আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭ কোটি টাকা এবং ৭টি স্লটার হাউসের নির্মাণে ব্যয় হবে ৩৭০ কোটি ৫৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
অন্যদিকে প্রকল্পটির অধীনে আরও ১২টি ব্রিজ নির্মাণ, ২২টি কালভার্ট, ৬শ মিটার ওভার পাস, ৮টি রাউন্ড এবাউট, শেখ রাসেল পার্কের বিনোদন সুবিধাসহ উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে চলতি বছরের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত।
প্রকল্পের স্ট্রাকচার বাবদ ক্ষতিপূরণ ধরা হয়েছে ৫৭ কোটি টাকা, ফিজিক্যাল কনটিনজেন্সি ও প্রাইস কনটিনজেন্সি ধরা হয়েছে মোট প্রকল্পে ব্যয়ের ১ শতাংশ করে। অন্যদিকে প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ কোটি টাকা।
এদিকে ডিপিপিতে প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্ক বলা হয়েছে এয়ারপোর্ট রোড সম্পসারণ ও বিভিন্ন রাস্তা উন্নয়নের মাধ্যমে যানজট নিরসন, নগরবাসীর জীবনযাত্রার মানবৃদ্ধি করা, স্লটার হাউজ নির্মাণের মাধ্যমে পরিবেশের উন্নয়ন, পার্ক উন্নয়নের মাধ্যমে শিশুবান্ধব পর্যটনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিকরণ, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের মাধ্যমে পথচারী নিরাপদে রাস্তা পারাপারে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধিকরণ, নগরীর সৌন্দর্য্যবৃদ্ধিকরণ। প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার পর এর রক্ষণাবেক্ষণে প্রথম বছরে ব্যয় হবে দুই কোটি টাকা, যা সিটি করপোরেশনের রাজস্ব বাজেট থেকে নির্বাহ করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই বিষয়ে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন পূর্বদেশকে বলেছেন, বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম গতিশীল করা এবং বিমানবন্দর ব্যবহারকারী ও সংশ্লিষ্ট এলাকার যাত্রীসাধারণের জন্য এই সড়ক চার লেনে উন্নীত করা সময়ের দাবি ছিল। শাহ আমানত বিমানবন্দর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার। বাইরে থেকে কেউ বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে নগরীতে প্রবেশ করার সময় একটি নেতিবাচক মাইন্ডসেট তৈরি হয়ে যায়। এই সড়ক দিয়ে দুটি গাড়ি পাস করতে পারে না। চট্টগ্রামে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে এবং আরও হবে। ফলে বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আরো বাড়াতে হবে। সেই পরিকল্পনায় বিমানবন্দর সড়কটি চার লেনে উন্নীত করা একান্ত প্রয়োজন। তাই আমরা সড়কি ৪ লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে আরও আগে। সবধরনের ফরমালিটি শেষে এখন ডিপিপি তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে গেলে ২০২২ সালের মধ্যে সড়কটি ৪ লেনে উন্নীত হয়ে যাবে।
ওভারব্রিজের বিষয়ে তিনি বলেন, আগে মানুষ ওভারব্রিজ ব্যবহারে উৎসাহী ছিল না। তখন মানুষও কম ছিল, ওভারব্রিজের প্রয়োজনীয়তাও কম ছিল। এখন জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে ৩৮টি মোড়ে ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে। তাও এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হলে নগরজীবনে গতি আরও বাড়বে।