২৮ বছর আগে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন

28

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ বছর আগে স্ত্রী হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড হয়েছে। গতকাল সোমবার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক জসিম উদ্দিন আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এই বিষয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন চৌধুরী ও চন্দন দাশ জানান, আসামির বিরুদ্ধে মামলার এজাহারে যে অভিযোগ আনা হয়েছিল তা আদালতের সামনে সাক্ষ্যসাবুত দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণে আদালতের বিচারক আসামিকে উল্লেখিত দন্ড দিয়েছেন।
আদালত থেকে প্রাপÍ তথ্যমতে, ভিকটিম লুৎফুন্নেছা খানম নিলুর সাথে ১৯৮১ সালে চান্দগাঁও থানা এলাকার গোলাম আলী নাজির বাড়িস্থ জালাল আহমদ চৌধুরীর ছেলে মুহাম্মদ সরওয়ার আলম চৌধুরীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ভিকটিমের উপর নির্যাতন শুরু হয় যৌতুকের জন্য। চলতে থাকে মানসিক নির্যাতনও। সংসার জীবনে এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের মা এক পর্যায়ে ১৯৯৪ সালের ২৪ নভেম্বর নির্যাতনে মারা যান। এসময় সরওয়ার আলম, তার ভাই মাহফুজুর রহমান ও অপর সহযোগী রফিকুল ইসলাম নিহত নিলুকে দোতলা থেকে নীচতলার বাথরুমে নিয়ে যান। সেখানে শাওয়ারের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে বলে বাইরে প্রচার করেন। পরদিন ২৫ নভেম্বর ভিকটিমের পিতা মুহাম্মদ ইসমাঈল থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এর আগে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করলে বাদীপক্ষে নারাজি দেয়া হয়। এসময় এক আদেশে আদালতের বিচারক ঘটনার বিচারিক তদন্তের আদেশ দেন। প্রতিবেদন আসার পর আদালতের বিচারক নিলুকে হত্যার বিষয়টি বিচারের জন্য আমলে নেন। তিনজনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচারকাজ শুরু করেন বিচারক।
আদালতের তথ্যমতে, এই মামলা প্রমাণ করতে মোট ৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। গতকাল আসামি সরওয়ার আলম চৌধুরীকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদন্ড দেন বিচারক। ২০১ ধারায় ৫ বছরের কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের কারাদন্ডাদেশ দেন আদালতের বিচারক।