২৬ মার্চ পরবর্তী ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ বাবুনগরীর

7

অরাজনৈতিক সংগঠন দাবিদার হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। ওই বার্তায় তিনি বলেছেন, হেফাজত হলো দেশের বড় একটি অরাজনৈতিক দল। বিগত ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করা হেফাজত ২০২১ সালে এসে প্রায় ১১ বছরে পদার্পণ করেছে। কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না কোনো পার্টির সাথে হেফাজতের সম্পর্ক ছিল। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে হেফাজত আমিরের ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা ইন’আমুল হাসান ফারুকী’র প্রেরিত ২০ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ভিডিও বার্তায় হেফাজত আমির বাবুনগরী বলেন, হেফাজত শান্তি-শৃঙ্খলা চায়। কোনো অশান্তি বা বিশৃঙ্খলায় যেতে চায় না। হেফাজত কোনো সংঘাতেও যেতে চায় না। কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানো হেফাজতের উদ্দেশ্য নয়। কোনো পার্টি বা দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন হেফাজত ইসলামের উদ্দেশ্য নয়। হেফাজতের উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর জমিনে হযরত
মুহাম্মদ (স.) এর এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা। এই হলো হেফাজতের অবস্থান।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর বিরোধী হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না বলে দাবি করে হেফাজত আমির ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, এমনি কিছু কিছু বক্তা তাদের বক্তব্যে এ ব্যাপারে বললেও কিন্তু মোদি আসার ব্যাপারে হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। অথচ মোদীর সফর ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মার্চ জুমাবার দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু দুর্ঘটনা হয়েছে ।
এছাড়া ২৬ মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসূচি ছিল না। আমাদের কোনো কমান্ড ছিল না। আমি নিজে হাটহাজারী মাদ্রাসায় ছিলাম না, দূরে সফরে ছিলাম। এর আগে ঢাকার বায়তুল মোকাররমে কিছু মুসল্লী এবং ক্যাডারের মাঝখানে কিছু অঘটন ঘটেছে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভিতরে ক্যাডাররা মুসল্লিদেরকে মারধর করেছে। এরপরে হাটহাজারীর ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য আমরা দুঃখিত। আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে হেফাজত আমির দাবি করেন।
আমাদের দেশের অবস্থা একটু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে- এমনটা মন্তব্য করে হেফাজত আমির ভিডিও বার্তায় আরও বলেন, মাহে রমজানে প্রশাসন বেধড়কভাবে আমাদের হেফাজত ইসলামের নেতা-কর্মী, হক্কানী আলেম-ওলামাদের, দেশের জনগণকে, ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানি ও গ্রেপ্তার করছে। অবিলম্বে এ ধরপাকর ও হয়রানি বন্ধ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। তাছাড়া আমাদের হেফাজত নেতৃবৃন্দ ছাড়াও আলেম-ওলামাসহ ছাত্র ও তৌহিদী জনতা যাদেরকে ইতোমধ্যে আটক করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
বিগত ২০১৩ সালের সাজানো মামলাগুলো ডাহা মিথ্যা মামলা দাবি করে হেফাজত আমির ‘প্রশাসন এতোদিন কোথায় ছিলো’ জানতে চেয়ে বলেন, প্রায় ৭-৮ বছর পর ২০১৩ মামলায় অনেক হেফাজত নেতা, আলেম-উলামা ও ছাত্র তৌহিদী জনতাকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদেরও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ইসলাম সন্ত্রাসের ধর্ম নয়, শান্তির ধর্ম। নৈরাজ্য, অশান্তি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ আমরা চাই না।
ছাত্র-জনতা ও আলেম-ওলামা এবং হেফাজত নেতৃবৃন্দের প্রতি পরামর্শ দিতে গিয়ে হেফাজত আমির বলেন, আপনারা ধৈর্য ধরুন এবং সবর করুন। কোনো সংঘাতে যাবেন না। ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও করবেন না। ইসলাম কখনো জ্বালাও-পোড়াও বিশ্বাস করে না; বরং এগুলোকে হারাম মনে করে।
ভিডিও বার্তায় তিনি সরকার ও জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, আলেম-ওলামারা শান্তিপ্রিয়, তারা শান্তি চায়। তারা দেশকে ভালোবাসে এবং জাতিকে মহব্বত করে। দেশের শান্তি কামনা করে এ রমজান মাসে সকল প্রকার বালামুসিবত ও আপদ-বিপদ দূর হওয়ার জন্য সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। এটা আপনাদের প্রতি আমার নসিহত।