২৩ বছরেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হয়নি

33

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেছেন, দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম করে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চুক্তি করেছিলাম। বিগত ২৩ বছরেও সেই পার্বত্য চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে জুম্ম জাতির পরিবর্তে ভিনদেশীরা পার্বত্য অঞ্চল দখল করছে। সন্তু লারমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে অনেক কিছু করার ও ভাবার বিষয় আছে। পার্বত্য অঞ্চলের ১৩ ভাষাভাষির যে ১৪টি জাতি রয়েছে তারা প্রায় বিলুপ্তির পথে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ও ‘হিল উইমেন্স ফেডারেশন’ এর ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর যৌথ উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলা সদরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
গতকাল সোমবার সকাল ১০ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এবারে জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘Women in Leadership: Achieving an Equal Future in a Covid-19 World’। প্রতিপাদ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রেক্ষাপটে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও মহিলা সমিতি তাদের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘করোনাকালে সমভবিষ্যৎ প্রতিষ্ঠায় নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করি, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের আন্দোলন জোরদার করি’।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা। এছাড়া মহিলা সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রিতা চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন টিআইবি’র ট্রাস্টি অ্যাড. সুষ্মিতা চাকমা, অবসরপ্রাপ্ত উপ-সচিব প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, এম এন লারমা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এর সভাপতি বিজয় কেতন চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নান্টু ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশিকা চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক নিপন ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি রিনা চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা বলেন, সমাজে শোষণ, বঞ্চনা, অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে নারী সমাজের জাগরণ ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের গতিধারায় এবং বিশ্বব্যাপি নির্যাতন, নিপীড়ন, বঞ্চনা, বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার নারীর নিরাপত্তা, সমঅধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম তথা নারী মুক্তি আন্দোলনসহ মানবসমাজের প্রগতির ক্ষেত্রে ৮ মার্চ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও ঐতিহাসিক একটি দিন। পার্বত্য চট্টগ্রামের এহেন অনিশ্চিত ও নাজুক পরিস্থিতিতে পাহাড়ি নারীর সমঅধিকার ও সমমর্যাদা যেমনি প্রতিনিয়ত ভূলুন্ঠিত হয়ে চলেছে, তেমনি তাদের নিরাপত্তাহীন জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।