২০ দিনে ১১ দালাল আটক গাইনি ওয়ার্ড থেকে

22

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডেই দালালের দৌরাত্ম্য। এসব দালালদের হাতে জিম্মি রোগী ও তাদের স্বজনরা। দালালের উপস্থিতি বেশি থাকে হাসপাতালটির গাইনি ওয়ার্ডে। পুলিশি অভিযান চললেও বন্ধ করা যাচ্ছে না তাদের অপতৎপরতা। আর এসব দালালদের কারণে রোগীদের পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে। গত ২০ দিনে চমেক হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১১ জন দালালকে আটক করা হয়। এদের সবাইকে আটক করা হয়েছে ৩৩ নং গাইনি ওয়ার্ড থেকে। গাইনি ওয়ার্ডের একজন রোগীর একসাথে অনেক ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর দরকার হয়। কোথায় কি পাওয়া যায় তা জানেন না অনেক রোগীর অভিভাবক। আর সে সুযোগটা কাজে লাগায় দালাল চক্র। রোগীদের নানাভাবে ফুঁসলিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, গত ১৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেলের ৩৩ নং গাইনি ওয়ার্ড থেকে ১১ জন দালালকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ১৪ ডিসেম্বর সাহাব উদ্দিন নামে এক দালালকে আটক করা হয়, ২০ ডিসেম্বর আরও ৩ জনকে আটক করা হয়, ২৩ ডিসেম্বর মোরশেদ আলম নামে একজন এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালের পহেলা জানুয়ারি হাসপাতাললটির একই ওয়ার্ড থেকে ৬ জন দালালকে আটক করা হয়। এর আগে গত বছরের অক্টোবর মাসে ১০ জনকে আটক করা হয়। যাদের বেশির ভাগকে গাইনি ওয়ার্ড এবং জরুরি বিভাগ থেকে আটক করা হয়। পুলিশ বার বার অভিযান চালালেও দালালদের দৌরাত্ম্য কমছে না। দালাল ধরার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগ না দেওয়া এবং দেশের প্রচলিত আইনে এ অপরাধের (দালালি) নির্দিষ্ট ধারা না থাকায় মামলা দায়ের করার সুযোগ থাকে না। ফলে শুধুমাত্র অভিযোগ দাখিল করে আদালতে পাঠানো হয় দালালদের। জরিমানা দিয়ে জামিন পাওয়ার পর আবারও হাসপাতালে এসে এই কাজে জড়িয়ে পড়ে তারা।
গাইনি ওয়ার্ড সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ১ শ’র মতো রোগী ভর্তি হন। গর্ভবতী নারীদের সন্তান প্রসব হওয়ার সাথে সাথেই রক্ত, ওষুধসহ অনেক জিনিসের দরকার হয়। অনেক রোগীর অভিভাবক কোথায় কি পাওয়া যায় তা জানেন না। আর সে সুযোগ কাজে লাগায় দালাল চক্র। রোগীদের নানাভাবে ফুঁসলিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয় তারা। এছাড়া ওষুধ এনে দেয়ার নাম করে রোগীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আর আসে না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান জানান, দালাল নির্মূলে সর্বপ্রথম জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা পুরো হাসপাতালে ৫০০ পোস্টার টাঙিয়ে দিয়েছি। দালালের খপ্পরে পড়লে সরাসরি কল করে সেবা নিতে পারবে রোগীরা। কিন্তু এত কিছু করার পরেও কমছে না দালালের দৌরাত্ম্য। হাসপাতালের রোগীর ধারণ ক্ষমতা যতটুকু, তার থেকে তিনগুণ বেশি রোগীকে আমরা সেবা প্রদান করছি। যার ফলে নিরাপত্তার ব্যাঘাত ঘটছে। হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে একজন দালাল পাচ্ছে বড় অংকের টাকা। রোগী ভাগাতে পারলেই মেলে হাজার হাজার টাকা। আর এসব চক্রের সাথে বড় একটি সিন্ডিকেট জড়িত।