২০২৩ সাল হবে চট্টগ্রাম নগর উন্নয়নের বছর

65

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ২০২৩ সাল হবে চট্টগ্রাম নগর উন্নয়নের বছর। প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম নগরীর উন্নয়নে ২ হাজার ৫শত কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সেই বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে নগরীর উন্নয়ন দৃশ্যমান করতে হবে। আগামী ডিসেম্বরে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু ট্যানেল চালু হলে নগরীর সড়কসমূহের উপর চাপ পড়বে। সেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে সঠিকভাবে উন্নয়ন কাজ করতে হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ১২শ কোটি টাকার টেন্ডার আহŸান করে শুষ্ক মৌসুমের মধ্যে কাজগুলোর গুণগতমান বজায় রেখে দ্রæত সম্পন্ন করার জন্য প্রকল্প পরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে নগরীর উপকূলীয় এলাকা ও বাংলাদেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ, চাক্তাইয়ে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অবর্ণনীয়। সিটি মেয়র বলেন, ৩৭নং ওয়ার্ডে সøুইস গেটের কারণে জলোচ্ছ¡াসে কৃষিজমির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ববরাবরে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির ক্ষতিপূরণ প্রদান করে সর্বাত্মক সহযোগিতার আহবান জানান তিনি।
মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোশেনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আয়বর্ধক প্রকল্পের মাধ্যমে চসিককে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তীতে সে সমস্ত আয়বর্ধক প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। নগরীর কোথায়-কোথায় সিটি করপোরেশনের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ রয়েছে তার একটি প্রতিবেদন তৈরি করে জানানোর জন্য বলা হলেও অদ্যাবধি সেই প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। এছাড়া চসিকের যে সকল মার্কেট রয়েছে সেগুলোর কি অবস্থা আয়ের পরিমাণ সহ প্রকৃত হিসাব পাওয়া যায়নি। এমনকি চসিকের ভূ-সম্পত্তিগুলোর নামজারি পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি। তিনি এস্টেট শাখাকে তিনভাবে বিভক্ত করে ভূ-সম্পত্তি শাখাকে গতিশীল করা পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন। সেই সাথে সভায় ভূ-সম্পত্তি শাখার জন্য আলাদা একটি স্থায়ী কমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চসিকের পুরাতন নগর ভবনের কেবি আবদুস সত্তার মিলনায়তনে ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ২১তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। চসিক সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ।
মেয়র আরো বলেন, মশকনিধন কার্যক্রম নগরীর সকল ওয়ার্ডে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলমান আছে। তা অব্যাহত এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন করার জন্য মোবাইল কোর্ট অব্যাহত রাখা এবং প্রচার প্রচারণা আরো জোরদার করতে হবে। তিনি ঢাকায় প্রতিটি সিটি করপোরেশনের মশক নিধনের জন্য ২ কোটি টাকার যে বরাদ্দ দেয়া হয় অনুরূপ চসিকের আয়তন বিবেচনায় সে পরিমাণ বরাদ্দ প্রদানের জন্য আবেদন করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনয়নে গুরুত্বারোপ করে মেয়র বলেন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা কর আদায়ে কঠোরতা অবলম্বন না করলে রাজস্ব আয় হ্রাস পাবে। ফলশ্রুতিতে চসিকের বিশাল জনবলের বেতনভাতা ও নগরীর চলমান উন্নয়ন কাজ থমকে যাবে। তিনি রাজস্ব বিভাগকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেন। এছাড়া নালার উপর অনুমোদনহীন যে স্ল্যাব স্থাপিত হয়েছে যেসব স্ল্যাবগুলো সুনির্দিষ্ট পরিমান নির্ণয় করে যথাযথ ফি আদায়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। এ ছাড়া ও রাজস্ব আদায়ে ক্ষেত্রে কোন কর্মকর্তা কর্মচারীর দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে সাথে সাথে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এমনকি চাকরিচ্যুত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের উদ্দেশ্য মেয়র বলেন, চসিক এলাকায় কোন সড়ক বাতি না জ্বললে সেই এলাকার সুপারভাইজারসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃক অনুমতিবিহীন সড়ক কর্তন করা থেকে বিরত থাকাসহ যে সড়ক কর্তন ফি জমা প্রদান করবে তার বাইরে সড়ক কর্তন করলে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষ, ঠিকাদার ও চসিকে দায়িত্বরত প্রকৌশলীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। সভায় মোহরা ছাফা মোতালেব কলেজের প্রতিষ্ঠাতার আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠানটিকে চসিকের অধিভূক্ত করার জন্য প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়।