২০২৩ সালে পূর্ণ নম্বরে সব বিষয়ে পরীক্ষা

22

পূর্বদেশ ডেস্ক

করোনা মহামারির মধ্যে বিষয় ও নম্বর কমিয়ে গত বছর এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এ বছর এসব পরীক্ষায় নম্বর অর্ধেকের মতো রাখা হলেও গতবারের চেয়ে বিষয় বেড়েছে। গতবার যেখানে শুধু গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। এ বছর এগুলোর সঙ্গে বাংলা, ইংরেজি, গণিতসহ অধিকাংশ বিষয়ের পরীক্ষা হবে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত হলো, আগামী বছরের (২০২৩) এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে সব বিষয়ে পূর্ণ নম্বরে এবং পূর্ণ সময়ে। তবে এসব পরীক্ষা এ বছরের (২০২২) মতো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্ত জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। অর্থাৎ আগামী বছর থেকে স্বাভাবিক সময়ের মতো হবে এসব পাবলিক পরীক্ষা।
স্বাভাবিক সময়ে এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ফেব্রুয়ারি মাসে এবং এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা এপ্রিল মাসে এবং এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা জুন মাসে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এ অবস্থায় পাঠের ক্ষতি যতটা সম্ভব কমাতে বাড়ানো হয়েছে শ্রেণি কার্যক্রমের সময়ও। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম ২০২৩ সালের ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত এবং এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত চলবে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে করোনার সংক্রমণ শুরুর আগেই এসএসসির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর এইচএসসি পরীক্ষা সে বছর আর অনুষ্ঠিত হয়নি। অধ্যাদেশ জারি করে, তার বদলে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন ফল দেওয়া হয়। পরে সংক্রমণে টানা দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ২০২১ সালের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষাও পিছিয়ে যায়। প্রায় ৯ মাস পেছানোর পর গেল নভেম্বরে এসএসসি ও আট মাস পিছিয়ে ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়। খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ঘাটতি থাকায় গতবছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় তিন বিষয়ে। আর এইচএসসি পরীক্ষা হয় তিন বিষয়ের ছয়টি পত্রে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, চলতি বছরের মতো ২০২৩ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে সকল বিষয়ের পূর্ণ নম্বরে এবং পূর্ণ সময়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে ওমিক্রনের প্রভাব শুরু হওয়ার আগে চলতি বছর ১৪ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে দু’দিন করে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে তারা। এর মধ্যে ২০ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারও প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
তিনি জানান, গেল ১৫ মার্চ থেকে তারা সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে সপ্তাহে ছয় দিন করে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে এই নবম ও দশম শ্রেণিতে মিলে সর্বমোট ১৬২ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় তারা ৩১৬ কর্মদিবস ক্লাস করার কথা। তাছাড়াও এই শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালে ৮ম শ্রেণিতে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারেনি। এমনকি নবম শ্রেণির পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারেনি তারা।
অন্যদিকে ২০২৩ সালে এইচএসসির পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, এই শিক্ষার্থীরা ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস করার কথা ছিল। কিন্তু তারা ক্লাস শুরু করতে পেরেছে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে। অর্থাৎ তারা ৮ মাস ক্লাস করার সুযোগই পায়নি বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে তারা সর্বমোট ২০০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। স্বাভাবিক অবস্থায় ৩৩০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রম হতো। এই পরীক্ষার্থীরা ২০২১ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের সংক্ষিপ্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে।