২০২০ সালে আইসিটি খাতের প্রত্যাশা

285

কালের পরিক্রমায় শুরু হয়েছে নতুন বছর। ২০১৯-এর পাওয়া- না পাওয়া ছাপিয়ে সবার নজর এখন নতুন বছরের সম্ভাবনার দিকে। এ বছর দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত নিয়ে সরকারফের নানান পরিকল্পনা রয়েছে। সেসবের বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ এ খাতে অনেকখানি এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রসার : নতুন বছরে আরও ব্যাপকভাবে দেশের আনাচেকানাচে তথ্য-প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দিতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার পরিসর বাড়ানো হবে বলে আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস’র (বেসিস) সভাপতি আলমাস কবীর জানান, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ থেকে বহিঃর্বিশ্বে রপ্তানি হওয়া আইসিটি পণ্য ও সেবার পরিমাণ প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
যদি দেশের আনাচেকানাচে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে এই অংক আরও বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করেন আলমাস কবীর। এ বছর সরকারি কাজের ক্ষেত্রে দেশীয় আইটি বা আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার একটি নীতিমালা তৈরি হবে বলেও আশাবাদ জানান তিনি।
আলমাস বলেন, সরকারের সঙ্গে আমাদের কথা চলছে, সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। এটার একটা আইন বা নীতিমালা হওয়া দরকার। তাহলে এটা নিয়ে কোনো কথা উঠবে না। সেই কাজটিই এবছর চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
মুজিববর্ষ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালকে মুজিববর্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। একই সঙ্গে সাড়া জাগানিয়া ‘ভিশন ২০২০’ স্লোগানের কারণে এ বছরটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য। এরই মাঝে মুজিব বর্ষ উদযাপনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আইসিটি বিভাগ।
এ ব্যাপারে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বাংলানিউজকে বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ আমাদের যে আসল উদ্দেশ্য ‘উন্নত বাংলাদেশ’ গড়ে তোলা তার যথাসম্ভব প্রস্তুতি ও অগ্রগতি আমরা এ বছরেই করে ফেলতে চাই। মুজিব বর্ষের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মুজিব হান্ড্রেড ডট গভ ডট বিডি’ নামের যে ওয়েবসাইট তৈরির কাজ দিয়েছিলেন আমরা ইতোমধ্যে তা সম্পন্ন করেছি। এছাড়াও মুজিব বর্ষ উদযাপনে ১০০টি উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। যেমন ৭ মার্চ এবং ১৭ মার্চ দুইদিন আমরা শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ সর্বাধুনিক হলোগ্রাফিক ফরম্যাটে প্রচার করবো।
১০০+ কৌশল : মুজিববর্ষকে কেন্দ্র করে আইসিটি বিভাগ ১০০+ কৌশল বা ‘হান্ড্রেড প্লাস স্ট্র্যাটেজি’ গ্রহণ করেছে। এর আওতায় আইসিটি বিভাগের সব পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারী সারা বছরে অতিরিক্ত ১০০ ঘণ্টা অফিস করবেন। এছাড়া এর অংশ হিসেবে নতুন ১০০টি নাগরিক সেবাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসা হবে।
শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার : বর্তমানে দেশে আটটি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলছে। এ বছরে আরও ১১টি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা আইসিটি বিভাগের।
প্রাইমারি পর্যায়েও আইটি শিক্ষা : চলতি বছরে প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইটি বা আইসিটি বিষয়ক শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য আছে বলে বাংলানিউজকে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এছাড়া সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঁচ হাজার শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে আইসিটি বিভাগের।
বিদেশে প্রযুক্তি পণ্যের রপ্তানি : এ বছর ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ¯স্লোগানে দেশে তৈরি দেশীয় প্রযুক্তি পণ্য বিদেশে রপ্তানি সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি এজেন্ডা। ২০২০ সালে বেশ কয়েকটি স্মার্টফোন হ্যান্ডসেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের পুরো দমে উৎপাদনে যাওয়ার কথা। একই সঙ্গে বর্তমানে দেশে ল্যাপটপ, কম্পিউটার এবং এসবের যন্ত্রাংশও তৈরি হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, অতি শীঘ্রই এসব পণ্যও বিদেশে রপ্তানি হবে। সূত্র : ইন্টারনেট