১৮ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে আ.লীগ

65

রাহুল দাশ নয়ন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছরের শেষে কিংবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। সে লক্ষ্যেই নির্বাচন কমিশন এগিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে এমন আভাস পেয়েই আগেভাগেই প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। গত এক সপ্তাহ ধরে একটি গোয়েন্দা সংস্থা ও দলীয় লোকজন দিয়ে জরিপ কার্যক্রম শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। জরিপের অংশ হিসেবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে ১৮টি প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তরের ভিত্তিতেই দলীয় মনোনয়ন দিতে পারে আওয়ামী লীগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, সংসদীয় আসনগুলোতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে দলীয় জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদকদের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকেও বিতর্কিতদের বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য সংগ্রহ করেছেন দলীয় সভানেত্রী। সারাদেশের বর্তমান সাংসদদের নিয়েও চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ চলছে। এরমধ্যে যাদের বিরুদ্ধে বিতর্কের অভিযোগ আছে তাদের নিয়ে সতর্ক আছে দল। ইতোমধ্যে গোয়েন্দারাও কাজ শুরু করে দিয়েছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে সংগৃহিত তথ্যগুলোই মূলভিত্তি হতে পারে।
জরিপে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে যেসব তথ্য চাওয়া হচ্ছে সেগুলো হলো- প্রার্থীদের নাম, বয়স, ঠিকানা (স্থায়ী ও বর্তমান), পেশা, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও মোবাইল নম্বর, পিতার নাম, পিতার রাজনৈতিক পরিচয়, পরিবারে কেউ যুদ্ধাপরাধী ও স্বাধীনতা বিরোধী রয়েছে কিনা বিস্তারিত তথ্য, প্রার্থীর ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, অতীত ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিচয়, অনুপ্রবেশকারী কিনা? অনুপ্রবেশে পৃষ্ঠপোষকের নাম ও দলীয় পরিচয়, সম্ভাব্য জনসমর্থনের হার, সম্ভাব্য দলীয় সমর্থনের হার, নেতিবাচক কর্মকান্ড, ইতিবাচক কর্মকান্ড, মামলা সংক্রান্ত তথ্য, জনগণ ও দলীয় কর্মীদের সাথে আচার-আচরণ, প্রার্থী পূর্বে নির্বাচন করেছে কিনা, নির্বাচনে জয়ী হয়েছে কিনা, দলীয় বিদ্রোহী হয়ে থাকলে বিস্তারিত বিবরণ, উপজেলার সার্বিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণ ও মন্তব্য, দলীয় কোন্দল, গ্রুপিং ও একক নিয়ন্ত্রণের বিস্তারিত, জঙ্গিগোষ্ঠিসহ নিষিদ্ধ দলের সাথে সম্পর্ক, মোট ভোটার সংখ্যা পুরুষ ভোটার, মহিলা ভোটার, সংখ্যালঘু ভোটার, সততা ও নৈতিক দৃঢ়তা সম্পর্কে সুপারিশ।
আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, বিএনপি নির্বাচনে আসা না আসার বিষয়টি মাথায় রেখেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপির আন্দোলন প্রতিহত করেই নির্বাচনী নৌকায় চড়তে চাইছে দলটি। যে কারণে বছর দেড়েক আগেই সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাই কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। দুইধরনের তালিকা প্রস্তুত রাখবে আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে বিএনপিসহ অন্যান্য দলগুলোকে ৭০-৮০টি আসন ছেড়ে দিতে পারে আওয়ামী লীগ। যা বিএনপির নির্বাচনে আসা না আসার উপর নির্ভর করছে। আগামী সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে যে বৈঠক করবেন সেখানে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিবেন দলীয় সভানেত্রী। এমনকি এই সভা থেকে প্রার্থীদের ‘গ্রীন সিগন্যাল’ দেয়ারও সম্ভাবনা আছে। ডিসেম্বরে জাতীয় কাউন্সিলের আগেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করতে চায় আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে যারা মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কম এমন নেতাদের দলের দায়িত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত আসতে পারে।