১৭৫ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দিয়েছে সিটি কর্পোরেশন

82

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বিক কল্যাণে কাজ যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে চসিক আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ বছর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠকারী মরহুম এম এ হান্নান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মরহুম আতাউর রহমান খান কায়সারসহ ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা ও সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট, সম্মাননা ও সম্মানির অর্থ তুলে দেন মেয়র। এছাড়া অনুষ্ঠানে ঘরের চাবি তুলে দেয়া হয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের হাতে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের সহকারী হাই কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) শুভাশীষ সিনহা, রাশিয়ার অনারারি কনসাল জেনারেল স্থপতি আশিক ইমরান ও নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। এছাড়া চসিক প্যানেল মেয়র ড. নিছার উদ্দিন আহমদ, সমাজকল্যাণ ও কমিউনিটি সেন্টার স্ট্যান্ডিং কমিটি সভাপতি কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু, চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মফিদুল আলম, কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক মহিউদ্দিন রাশেদ বক্তব্য রাখেন।
অনুভুতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা এম এ হান্নানের সন্তান এসএম মাহফুজ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চসিক প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলর, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক, সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যগণসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
সিটি মেয়র বলেন, বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে সংবর্ধনা ও সম্মাননা দিচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। সংবর্ধনার পরিসর ও পরিধি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দুই বছর ১৫০ জন করে, পরের দুই বছর ১৭০ জন করে এবং এ বছর ১৭৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যে লক্ষ্যে ও উদ্দেশ্য নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে লড়েছিলেন, সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনৈতিক মুক্তিকে মূল লক্ষ্য ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এখনও অনেকের কাছে অজানা। সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধাদের এগিয়ে আসতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে মেয়র বলেন, আপনারা যে চেতনা, মানসিকতা ও সাহসীকতা নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, তা যেন বিনষ্ট না হয়। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা যাতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহির্ভুত কোন কর্মে জড়িয়ে না পড়ে। এই বিষয়ে আপনাদের গুরুত্বসহকারে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের দায়িত্ব এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে জাগ্রত রাখতে আপনাদেরকে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। বাংলাদেশকে পৃথিবীর একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছেন, তা বাস্তবায়নে আমাদের সকলকে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে সহযোগিতা করতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও সে দেশের জনগণের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে সিটি মেয়র বলেন, তাদের সমর্থন এ দেশের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিল। বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের এই অবদান বাঙালি জাতি আজীবন মনে রাখবে।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় ভারপ্রাপ্ত সহকারী হাই কমিশনার শুভাশীষ সিনহা বলেন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস। এ মাসে ভারত ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এদেশ পাক হানাদার মুক্ত হয়। অর্জন করে স্বাধীনতা।
তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ভারতীয় ভিসার প্রসেসিং সহজ করাসহ ৫ বছর মেয়াদী ভিসা চালু এবং প্রতি বছর ১শ জন মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় বলে উল্লেখ করেন। বিজ্ঞপ্তি