১৭০ মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা চসিকের

47

মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গতকাল সোমবার দুপুরে নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট, সম্মাননা ও সম্মানি তুলে দেন। এবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মোট ১৭০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনার পাশাপাশি সম্মানি হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে মোট ১৭ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামস্থ কনস্যুলেট এর সহকারী ভারতীয় হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী, সাবেক গণপরিষদ সদস্য আবু ছালেহ, চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সাহাবুদ্দিন, মহানগর কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা। এই সংবর্ধনায় প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, জোবাইরা নার্গিস খান, সমাজকল্যাণ স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু, শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান কাউন্সিলর নাজমুল হক ডিউক, চসিক সচিব মো. আবুল হোসেন, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যে লক্ষ্যে যুদ্ধ করেছিলেন, সে লক্ষ্য এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের অর্থনৈতিক মুক্তিকে মূল লক্ষ্য ও চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। সিটি মেয়র মুক্তিযুদ্ধের মতো অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের কাছে সমর্থন ও সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও সে দেশের জনগণের প্রত্যক্ষ সাহায্য সহযোগিতাকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বলেন, তাদের এই সমর্থন এ দেশের মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী জনগণকে অনুপ্রাণিত করেছিল। বন্ধু রাষ্ট্র ভারতের এই অবদান বাঙ্গালি জাতি আজীবন মনে রাখবে। মেয়র আরো বলেন, বাংলাদেশ আজ সফলতার সূচকে পাকিস্তানকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ দেশের মানুষের গড় আয়ু মাথাপিছু আয়, শিক্ষার সাফল্য অনেক দূর এগিয়েছে, যা কোনভাবে অস্বীকার করা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের সরকার আবার ক্ষমতায় আসলে দেশের এই অগ্রগতির চাকাকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি বলেন, করপোরেশনের পক্ষ থেকে গত বছরও আমরা ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা ও ১০ হাজার টাকা করে সম্মানির ব্যবস্থা করছিলাম। বর্তমানে ৫টি ওয়ার্ডে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো হলো ৪১নং ওয়ার্ডে ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা মো. আলাউদ্দিনের একতলা, ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২৫নং ওয়ার্ডস্থ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের একতলা, ২৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০নং ওয়ার্ডস্থ মুক্তিযোদ্ধা নুর আহামদ এর দুই তলা, ১০নং ওয়ার্ডস্থ ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মরহুম ইলিয়াছ চৗধুরীর একতলা, ৪নং ওয়ার্ডস্থ ২৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কুতুুব উদ্দিন চৌধুরীর একতলা ভবন নির্মাণ কাজ। অনুষ্ঠানে ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের জনগণ ও ভারত সরকারের সম্পৃক্ততা আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। আমাদের এই শ্বাস্বত বন্ধনকে কেউ ছিন্ন করতে পারবে না। তিনি বলেন, মাথাপিছু আয় প্রবৃদ্ধি, স্বাক্ষরতা অর্জন বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলো। সহকারী হাই কমিশনার তার চাকরি জীবনের ২১ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব সাফল্য ও উন্নতি করেছে, তার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আপনারা যারা এ দেশের নাগরিক তারা প্রতিদিন দেশকে দেখছেন বলে আপনাদের চোখে সাফল্যগুলো ধরা পড়ে না। কিন্তু আমি ২১ বছর যাবত তুলনামূলকভাবে আপনাদের দেশের সাফল্যগুলো ধরতে পারছি। মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক এমএলএ আবু ছালেহ বলেন, মেয়র আমার স্নেহভাজন। তাই তার আমন্ত্রণে অনুষ্ঠানে এলাম। তিনি বলেন, আমি মনে করি- আমার আগমনের কারণে দেশের মঙ্গল হবে। বর্ষীয়ান এই নেতা দেশের সাফল্যে খুশী হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ সুখী সমৃদ্ধশীল দেশে পরিণত হবে বলে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চলমান গৃহনির্মাণ প্রকল্পের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। বিজ্ঞপ্তি