১৪৮ কোটি আয়কর আদায়

2

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাসব্যাপী ‘আয়কর তথ্য ও সেবা মাস’র কার্যক্রম গতকাল বুধবার শেষ হয়েছে। তবে ব্যক্তিশ্রেণির রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও সংগঠনগুলোর অনুরোধে গত দুই বছরের মতো এবারও সময় বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অর্থাৎ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন করদাতারা।
এদিকে আয়কর তথ্য ও সেবা মাসে চট্টগ্রামের ৪টি কর অঞ্চলের সেবা বুথে আয়কর আদায় হয়েছে ১৪৭ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬০৭ টাকা (প্রায় ১৪৮ কোটি)। একই সঙ্গে রিটার্ন জমা পড়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯১টি। এনবিআর চট্টগ্রামের চার কর অঞ্চল থেকে ৬ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে।
চট্টগ্রাম আয়কর বিভাগের তথ্য মতে, গত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রামের চারটি কর অঞ্চলের সেবা বুথে ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৯১টি রিটার্ন জমা পড়েছে। রিটার্নের সাথে আয়কর আদায় হয়েছে ১৪৭ কোটি ৯৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬০৭ টাকা। এসব অঞ্চলে নতুন ই-টিআইএন গ্রহণকারী করদাতার সংখ্যা হলো ১১ হাজার ৫৭৫ জন এবং সেবা গ্রহণকারী করদাতার সংখ্যা হলো ২ লাখ ৬৮ হাজার ৫৪৬ জন।
বর্তমান আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে বিশেষ পরিস্থিতির কারণে এনবিআর তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে এক মাস সময় বাড়িয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ১৮৪ জিতে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে চিঠিতে জানিয়েছে এনবিআর।
ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা বা রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় গতকাল বুধবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সংগঠন সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। গত মঙ্গলবার দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও এক মাস বাড়ানোর অনুরোধ করে। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমার সময় বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয় তারা।
চিঠিতে বলা হয়, করোনার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতিতে শিল্পোৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সেবা খাত বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। আর্থিক খাতে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে সময়মতো রিটার্ন দাখিল করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তাই রিটার্ন জমার সময় এক মাস বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করে এফবিসিসিআই।
গত ১ নভেম্বর নগরীর আগ্রাবাদে পায়রা উড়িয়ে আয়কর তথ্য-সেবা মাসের উদ্বোধন করেন কর আপিল কমিশনার সফিনা জাহান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার মো. ইকবাল বাহার, কর অঞ্চল-২ এর কমিশনার সামিয়া আখতার, কর অঞ্চল-৩ এর কমিশনার মো. শাহাদাৎ হোসেন শিকদার ও কর অঞ্চল-৪ এর কমিশনার ছাবিনা ইয়াসমিন।
সেবা মাস উপলক্ষে এখানে করদাতারা ই-টিআইএন নিবন্ধন, রিটার্ন গ্রহণ, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র প্রদান, আয়কর রিটার্ন ফরম, চালান ও সিটিজেন চার্টার সরবরাহ, আয়কর সম্পর্কিত পরামর্শ ও তথ্য নেওয়া সুযোগ পেয়েছে।
জানা গেছে, করদাতারা অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। রেজিস্ট্রেশন বুথে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান সাপেক্ষে নতুন করদাতারা রেজিস্ট্রেশন ও বর্তমান করদাতারা রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। করদাতাদের আয়কর রিটার্ন, টিআইএন আবেদন এবং চালান ফরম প্রদান করা হবে। এছাড়া ই-পেমেন্টের মাধ্যমে করদাতারা অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর মেলার আয়োজন করেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও আয়কর মেলা হচ্ছে না। কিন্তু মেলার পরিবর্তে আয়োজন করা হয় ‘আয়কর তথ্য সেবা মাস’।