১২ জুন থেকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায়

64

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী রবিবার থেকে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শুরু হচ্ছে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন। এই ক্যাম্পেইন চলবে আগামি ১৫ জুন পর্যন্ত। এ বছর চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলায় প্রায় ১৪ লক্ষ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরের ৬ লক্ষ এবং চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৮ লক্ষ ২০ হাজার ৩৭৫ জন শিশু এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আসবে পাবে। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১ লক্ষ, ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ৫ লক্ষ শিশুকে একটি করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৮ লাখ ২০ হাজার ৩৭৫ জন শিশুকে একটি করে নীল ও লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সিটি কর্পোরেশনের পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী এই ক্যাম্পেইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরা বর্তমান সময়ে খুবই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অপুষ্টি দ‚রীকরণ সম্ভব হবে। সামাজিক ও শারীরিক দ‚রত্ব বজায় রেখে মাস্ক পরিধানসহ সব বিধি মেনে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। কোনো শিশু ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো থেকে যাতে বাদ না যায় সেদিকে সবাইকে অবশ্যই নজর রাখতে হবে। এছাড়া শিশুর বয়স ৬ মাসপূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণমত ঘরে তৈরি পুষ্টি সমৃদ্ধ সুষম খাবার খাওয়াতে হবে।
তিনি বলেন, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপুল শিশুর অপুষ্টি, অন্ধত্ব প্রতিরোধ, দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত, হাম ও ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার হ্রাসসহ সকল ধরণের মৃত্যুর হার হ্রাস করে। পরিবারের রান্নায় ভিটাামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার শিশুর জন্য যথেষ্ট উপকারি। মা ও শিশুর পুষ্টির জন্য গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি করে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ প্রাণিজ ও উদ্ভিজ্জ খাবার থেতে দিতে হবে। চট্টগ্রাম জেলার প্রত্যেক উপজেলায় ইতোপূর্বে অনুষ্ঠিতব্য সকল জাতীয় কর্মসূচিসমূহ শতভাগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আসন্ন জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সকল কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারেও সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাগণকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাস্পেইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চসিকের জোন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তারা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ১২ জনু থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত চার দিনব্যাপী ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়াবেন। ক্যাস্পেইনে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের নীল রঙের ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের লাল রঙের ভিটামিন ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরো বলেন, ৪১টি ওয়ার্ডে স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১ লক্ষ, ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী প্রায় ৫ লক্ষ শিশুকে একটি করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তিনি কোনো শিশু যাতে বাদ না যায় সে ব্যাপারের জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
চসিকের স্বাস্থ্য স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য কাউন্সিলর আবদুল সালাম মাসুম বলেন, করোনাকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাস্পেইনকে সফল ও সার্থক করতে হবে। তিনি বলেন, আগামি রবিবার সকাল ৯ টায় কাপাসগোলা নাজুমিয়া মেমোরিয়াল দাতব্য চিকিৎসালয়ে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাস্পেইনের শুভ উদ্বোধন করবেন।