হেলথকেয়ার বাংলাদেশে আনছে ক্যান্সারের ওষুধ ‘সাইরামজা’

21

 

ফুসফুস, পাকস্থলি ও লিভারের কয়েক ধরণের ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ ‘সাইরামজা’ বাংলাদেশের বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস। গতকাল শুক্রবার ঢাকা ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলন এ ঘোষণা দেন হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের নির্বাহী পরিচালক বি কে রায়।
সাইরামজা তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ‘এলি লিলি’। এ কোম্পানির ভারতীয় শাখার সঙ্গে মিলে বাংলাদেশের বাজারে ওষুধটি আমদানি করবে হেলথ কেয়ার। তবে বাংলাদেশে এর দাম কত হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
বি কে রায় বলেন, ওষুধটির দাম নির্ধারণের জন্য তারা বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। রোগীদের এক মাসে সাইরামজার যে ডোজ লাগে, ভারতে সেজন্য চার থেকে পাঁচ লাখ রুপি খরচ হয়। আমরা চেষ্টা করছি দামটা বাংলাদেশে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমিয়ে আনার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক এম এ হাই বলেন, ‘মানুষ যত আধুনিক হচ্ছে ক্যান্সার তত বাড়ছে। আমাদের মত দেশে আরও বাড়ছে। ধূমপান, তামাক (জর্দা) চাবানোর মত বদ অভ্যাস অনেক রকম ক্যান্সার বাড়াচ্ছে। এছাড়া আমাদের খাদ্যাভ্যাস, খাদ্য ও পরিবেশ দূষণকে এর জন্য দায়ী করা যায়। ক্যান্সার রোগীদের কষ্ট লাঘবে সাইরামজা ভূমিকা রাখতে পারে’।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ক্যান্সারের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২০ সালে বাংলাদেশে এক লাখ ৫৬ হাজার ৭৭৫ জন মানুষের মধ্যে ক্যান্সার ধরা পড়ে। আর ওই বছর ক্যান্সারে মারা গেছেন ১ লাখ ৮ হাজার ৯৯০ জন।
সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত থেকে বক্তব্য দেন এলি লিলি ভারতের ব্যবস্থাপনা পরিচালক লুকা ভিসিনি। তিনি বলেন, ‘বহু মানুষের ক্যান্সার চিকিৎসায় সাইরামজা ব্যবহারে যথাযথ ফল মিলেছে। বাংলাদেশে মেটাস্ট্যাটিক, নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সারের প্রথম পর্যায়ের চিকিৎসায় এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের দ্বিতীয় পর্যায়ের চিকিৎসায় সাইরামজা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে’।
ওষুধটি কীভাবে কাজ করে তার বর্ণনা দিয়ে হেলথকেয়ার বাংলাদেশের মেডিকেল সার্ভিসেস বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক হাফিজুর রহমান বলেন, এটি মূলত ক্যান্সার কোষগুলোর পুষ্টির যোগান বন্ধ করে সেগুলোকে মেরে ফেলে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ‘যৎসামান্য’।
নির্বাহী পরিচালক বি কে রায় বলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য কেমোথেরাপির মত সাইরামজার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ‘অত বেশি নয়’। তবে কারও কারও ডায়রিয়া, রক্তচাপ বৃদ্ধি, রক্ত চলাচল নালী আটকে যাওয়া, মাথা ঘোরাসহ আরো কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর এফডিএ ‘সাইরামজা’ অনুমোদন দেয়। এরপর থেকে ওষুধটি পাকস্থলীর, ফুসফুস, যকৃত ও বৃহদান্ত্রের ক্যান্সার ছাড়াও দেহের অন্যান্য অংশের ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে। খবর বিডিনিউজের