হেরোইনের আগ্রাসন রুখতে মরিয়া মেক্সিকো

39

মেক্সিকোর পাহাড়ি এলাকার গভীর জঙ্গল ছেয়ে গেছে গোলাপি রঙের পপি গাছে। মেক্সিকোর গ্রীষ্মমন্ডলীয় সিয়েরা অঞ্চল পপিচাষীদের অভয়ারণ্য। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা আর ঘন অরণ্য, অবৈধ পপির চাষের জন্য স্বর্গরাজ্য। মানুষের চোখের আড়ালে খুব সহজেই চাষ করা যায় পপি। ডয়চে ভেলে তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পপিক্ষেত লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য মাঝে মাঝে নানারকম শস্য ও ভুট্টার চাষ করা হয়।
সরকারও পপি চাষীদের বৈধ শস্য চাষের জন্য নানা সহায়তা করে থাকে। কিন্তু পাহাড়ের পাথুরে ঢালে পাতলা মাটির আস্তরণে অন্য কোনো শস্য তেমন ভালো হয় না। গুয়েরেরো রাজ্যের দরিদ্র পাহাড়ি জেলাগুলোতে অবৈধ পপির চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে এগিয়ে আছে মার্কিন সীমান্ত থেকে ৮০০ মাইল দূরে অবস্থিত হুকিলা ইউকুচানি জেলা। অপরাধের হারও সবচেয়ে বেশি এই রাজ্যে। চাষ, সরবরাহ, বাজারজাতকরণ, সবকিছুই আইনত দন্ডণীয় হলেও অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলে পপি বীজের কেনাবেচা।
এখন আর অনেক ক্ষেত্রে তেমন রাখঢাকেরও প্রয়োজনবোধ করেন না পপি চাষীরা। কেউ কেউ কষ্ট করে পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে চাষ না করে নিজের বাড়ির উঠানেই লাগাচ্ছেন গাছ। পপি এবং এ থেকে উৎপাদিত আফিম ও হেরোইনের দৌরাত্ম কমাতে জোরেসোরে মাঠে নেমেছে মেক্সিকোর সেনাবাহিনী। দুর্গম পাহাড়ি এলাকাতেও চলছে বিশেষ অভিযান।
পাহাড়ে ভাঁজে ভাঁজে তল্লাশি চালিয়ে লুকিয়ে রাখা পপিক্ষেত খুঁজে বের করছেন সেনারা। তারপর সেগুলে কেটে কেটে এক জায়গায় জড়ো করা হচ্ছে। শুধু পপি গাছ কেটেই নিরস্ত হচ্ছেন না সৈনিকরা। পরবর্তীতে গাছের বীজ থেকে যাতে চাষীরা আবার বীজ উৎপাদন করতে না পারেন, সেজন্য জড়ো করা গাছে আগুন ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে।
দুর্গম এ পাহাড়ি এলাকায় যারা থাকেন, তাদের জন্য নেই পর্যাপ্ত নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা। সবচেয়ে কাছের হাসপাতাল বা স্কুলও কয়েক ঘণ্টার পথ। ফলে, ভবিষ্যতের চিন্তায় উদ্বিগ্ন পপি চাষীদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও ভাবছেন সীমানা পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার কথা।