হিসাবরক্ষণ অফিসের আপত্তিতে তুলকালাম

42

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের একটি বিলের সাথে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল হয়েছে বলে আপত্তি তুলেছে হিসাব রক্ষণ অফিস। গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বিলটি নিয়ে আপত্তি জানালে তার প্রতিবাদ করেন জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ফোরকান। এক পর্যায়ে এজি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে ফোরকানের কথা কাটাকাটি হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে ফোরকানকে পাঁচলাইশ থানায় নিয়ে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এজি অফিসের এক কর্মচারী বলেন, ফোরকান ভুয়া বিল ভাউচার নিয়ে এসেছিল। আমরা আপত্তি জানালে সে মারমুখী হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে কি হয়েছে আমরা জানি না। এই ফোরকানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকায় এজি অফিস তাকে নিয়ে সতর্ক ছিল।
পাঁচলাইশ থানা ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদার বলেন, এজি অফিসে একটু সমস্যা হয়েছিল। সেখানে একটি বিল নিয়ে তর্কাতর্কি হয়েছিল। এজি অফিস থেকে পুলিশ ডাকলে তত্ত্বাবধায়কসহ পাঁচলাইশ থানায় এসেছিল। আমরা বলেছি কোনো অনিয়ম দুর্নীতি থাকলে দুদক মামলা করবে। এগুলো আমাদের দেখার বিষয় না। কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা আটকও করা হয়নি।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক শেখ ফজলে রাব্বী পূর্বদেশকে বলেন, একটা বিল নিয়ে গিয়েছিল। সেটি ফেরত দেয়া হয়েছে। সেখানে যেটি ভুল পাওয়া গেছে সে কাগজটি কিভাবে আসলো তা দেখছি। আমরা এ বিষয়ে জিডি করবো। ইতোমধ্যে থানায় কথা বলেছি। এখানে কেউ গ্রেপ্তার কিংবা আটকের কোন ঘটনা ঘটেনি। এজি অফিস পাঁচলাইশ থানা এলাকায় হওয়ায় আমরা প্রথমে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু জেনারেল হাসপাতাল কোতোয়ালী থানায় এলাকায় হওয়ায় আমরা চলে আসি।
তিনি বলেন, জুন ক্লোজিং হিসেবে আমরা অনেক বিল সাবমিট করি। এজি অফিস সেগুলো যাচাই-বাছাই করে। যাচাই-বাছাইকালে কোনো আপত্তি থাকলে তারা সেটা আমাদের জানায়। এখানেও তাই হয়েছে। এখন বিলটি কিভাবে হলো সেটি আমরা খতিয়ে দেখবো। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা যেভাবে সিদ্ধান্ত দিবেন সেভাবেই ব্যবস্থা নিব। এজি অফিসে বিল নিয়ে ভুল বুঝাবুঝি থেকে জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মচারীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।
এর আগে জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. ফোরকানের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সে বছরের ৪ অক্টোবর জেনারেলর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কাছে ফোরকানসহ কয়েকজন ব্যক্তির তথ্য চাওয়া হয়। এতে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ২০০৮ সাল থেকে যত টেন্ডার পেয়েছে এবং তাদের মাধ্যমে যত সরবরাহ ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে তার নথি চেয়েছিল দুদক। দীর্ঘদিন ধরে ফোরকান জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত আছেন।